হবিগঞ্জেও ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে বন্যা। গত কয়েক দিনের উজানের পাহাড়ি ঢল এবং প্রবল বর্ষণে কুশিয়ারা, খোয়াই ও কালনীসহ বিভিন্ন নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে জেলার আজমিরীগঞ্জ ও নবীগঞ্জ উপজেলার অনেক এলাকা প্লাবিত হয়েছে। ইতোমধ্যে কিছু স্থানে বিদ্যুৎ ও যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে গেছে।
আজমিরীগঞ্জ সরকারি কলেজ, মিয়াধন মিয়া মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়, পাহাড়পুর কলেজ, কাকাইলছেও মমচাঁন ভুঁইয়া উচ্চ বিদ্যালয়সহ সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে আশ্রয়কেন্দ্র ঘোষণা করা হয়েছে। বন্যাকবলিত গ্রামের মানুষদের উদ্ধার করে প্রশাসন নিরাপদ আশ্রয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে।
জানা যায়, নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জ উপজেলার পিরোজপুর অংশে কালনী ও কুশিয়ারা নদীর বাঁধ ডুবে এবং পাহাড়পুর এলাকার কৈয়ারঢালা রাস্তা ভেঙে পানি হাওরে প্রবেশ করছে। এতে বদলপুরের পাহাড়পুর, পিরোজপুর, কাকাইলছেও এবং পৌর এলাকার কয়েকটি ওয়ার্ড পানিতে তলিয়ে গেছে। ইতোমধ্যে উপজেলার কাকাইলছেও সরকারি আশ্রয়ণ কেন্দ্রে পানি ওঠায় সেখানে থাকা ৬০টি পরিবারকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে হবিগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মিনহাজ আহমেদ শোভন বলেন, ‘টানা বৃষ্টি ও উজানের ঢলে কুশিয়ারা, কালনী ও খোয়াই নদীর পানি ব্যাপক বৃদ্ধি পাচ্ছে। নবীগঞ্জে বাঁধ উপচে পানি প্রবেশ করছে এবং আজমিরীগঞ্জে রাস্তা ভেঙে পানি ঢুকছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে।’
নবীগঞ্জ উপজেলা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) উত্তম কুমার দাশ বলেন, ‘সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে আশ্রয়কেন্দ্র ঘোষণা করা হয়েছে, পানি দীঘলবাক ও ইনাতগঞ্জ ইউনিয়নে প্রবেশ করছে। পানিবন্দি অবস্থায় যারা আছেন তাদের উদ্ধারে প্রতিটি ইউনিয়নে চেয়ারম্যানদের নিয়ে কমিটি গঠন করা হয়েছে।’
আজমিরীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুলতানা সালেহা সুমী বলেন, ‘বিভিন্ন এলাকায় পানি প্রবেশ অব্যাহত রয়েছে। আমরা বন্যাকবলিত মানুষদের নিরাপদে নিয়ে যাওয়ার জন্য চেষ্টা করছি। অনেক মানুষকে নৌকায় করে নিরাপদে আনা হয়েছে।’
নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মহিউদ্দিন বলেন, ‘কুশিয়ারা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে নবীগঞ্জ উপজেলার পাহাড়পুর, রাধাপুরে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ উপচে ও ইনাতগঞ্জ-কসবা সড়ক ডুবে পানি বিভিন্ন গ্রামে প্রবেশ করছে। ইতোমধ্যে নৌকা প্রস্তুত রাখা হয়েছে। বন্যাকবলিত মানুষের মাঝে শুকনো খাবার দেওয়া হচ্ছে। সার্বক্ষণিক খোঁজখবর রাখছি।’