পদ্মায় তীব্র স্রোত, ফেরি চলাচল ব্যাহত

পদ্মা নদীতে পানি বাড়ার কারণে তীব্র স্রোতে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌপথে ফেরি চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। এ জন্য রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ঘাটে দুই কিলোমিটার এলাকাজুড়ে যানবাহনের সারি তৈরি হয়েছে।

গোয়ালন্দ উপজেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড অফিসের গেজ রিডার (পানি পরিমাপক) সালমা খাতুন জানান, গত চার-পাঁচ দিন ধরে পদ্মার পানি কমছিল। তবে রবিবার (৩ জুলাই) সকাল ৬টা থেকে সোমবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ১১ সেন্টিমিটার পানি বেড়েছে।

সরেজমিন সোমবার দুপুরে দেখা যায়, ঘাটের জিরো পয়েন্ট থেকে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের ইউনিয়ন বোর্ড পর্যন্ত দেড় কিলোমিটার এলাকাজুড়ে অপচনশীল পণ্যবাহী ট্রাকের সারি তৈরি হয়েছে। এর মধ্যে ৩০-৪০টি যাত্রীবাহী বাস রয়েছে। তবে কোরবানির পশুর ট্রাক যাত্রীবাহী বাস, পণ্যবাহী কাঁচামালের গাড়ি ও ব্যক্তিগত যানবাহনকে অগ্রাধিকার দিয়ে পার করা হচ্ছে।

বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া ঘাট অফিস সূত্রে জানা গেছে, দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ২১টি ফেরির মধ্যে ১৬টি ছোট-বড় ফেরি দিয়ে যানবাহন পারাপার করা হচ্ছে। পাঁচটি ফেরি যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে মেরামতে রয়েছে।

তীব্র স্রোতের কারণে প্রতিটি ফেরি পারাপারে দ্বিগুণ সময় লাগছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ১৮৯টি ফেরির ট্রিপ দৌলতদিয়া থেকে বিভিন্ন যানবাহন নিয়ে পাটুরিয়া গেছে। যার মধ্যে বাস ৪০২টি, পণ্যবাহী ট্রাক এক হাজার ২৭২টি, ছোট যানবাহন এক হাজার ১৪৫টি এবং মোটরসাইকেল ৭৫টি।

দৌলতদিয়া ঘাটে যানবাহনের সারিকুষ্টিয়ার কুমারখালী থেকে ডালবোঝাই করে আসা কাভার্ডভ্যান চালক কামরুল ইসলাম বলেন, ‘পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর থেকে ঘাটে তেমন যানবাহনের চাপ ছিল না। সোমবার হঠাৎ করেই দেখছি, ঘাটে ট্রাকের সিরিয়াল। দুই ঘণ্টা ধরে সিরিয়ালে আছি। হয়তো আরও ২ ঘণ্টার মতো থাকতে হবে। শুনেছি, মাত্র ১৬টি ফেরি দিয়ে যানবাহন পারাপার করা হচ্ছে। আর কয়েকদিন পর ঈদ। এই মুহূর্তে কর্তৃপক্ষের উচিত পর্যাপ্ত ফেরি প্রস্তুত রাখা।’

বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক প্রফুল্ল চৌহান বলেন, ‘সোমবার পদ্মার পানি ১১ সেন্টিমিটার বেড়েছে। প্রতিদিনই পানি বাড়ছে। তীব্র স্রোতে ফেরি চলাচলে হিমশিম খাচ্ছেন চালকরা। প্রতিটি ফেরি যানবাহন লোড করে পাটুরিয়া ঘাটে পৌঁছাতে একঘণ্টার বেশি সময় লাগছে। যেখানে আগে একঘণ্টায় ফেরিগুলো দুটি ট্রিপ দিতে পারতো। সেখানে এখন একটি ট্রিপ দিতে পারছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘২১টি ফেরির মধ্যে ১৬টি ছোট-বড় ফেরি চলাচল করছে। পাঁচটি ফেরি কম থাকায় এবং নদীতে স্রোতের কারণে ফেরির ট্রিপ কমেছে। যার ফলে ঘাটে কিছু অপচনশীল ট্রাক নদী পারের অপেক্ষায় রয়েছে। তবে কোরবানির গরুর ট্রাকগুলো সরাসরি ফেরিতে উঠতে পারছে।’