সাংবাদিক রুবেলকে পূর্বপরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে: দাবি পরিবারের

কুষ্টিয়ায় নিখোঁজের পাঁচ দিন পর সাংবাদিক হাসিবুর রহমান রুবেলের (৩১) মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (৭ জুলাই) কুমারখালী উপজেলার কুমারখালী পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের তেবাড়িয়া গ্রামের নির্মাণাধীন গোলাম কিবরিয়া ব্রিজের নিচ থেকে তার অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

সাংবাদিক হাসিবুবের পরিবারের দাবি, পূর্বপরিকল্পিত ভাবে কে বা কারা তাকে হত্যা করেছে। এ হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচার দাবি করেছেন তার পরিবারের সদস্যরা। তার মৃত্যুতে গভীর শোক জানিয়েছেন কুষ্টিয়ায় কর্মরত সাংবাদিকরা। একইসঙ্গে তারা ঘটনার তদন্তপূর্বক হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।

নিহত রুবেল কুষ্টিয়া জেলা রিপোর্টার্স ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক, স্থানীয় দৈনিক কুষ্টিয়ার খবর পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও দৈনিক আমাদের নতুন সময় পত্রিকার কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধি ছিলেন। তিনি কুষ্টিয়া শহরের হাউজিং এ ব্লক এলাকার মৃত হাবিবুর রহমানের ছেলে।

নিহতের ছোট ভাই মাহবুর রহমান বলেন, আমার ভাই খুব ভালো মানুষ ছিলেন। তিনি সাংবাদিকতার পাশাপাশি কাঁচামালের আড়তদারি করতেন। একজন পরোপকারী মানুষ ছিলেন। কে বা কারা তাকে পূর্বপরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে। খুনিদের গ্রেফতার এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই।

নিহতের চাচা মিজানুর রহমান মেজর বলেন, সুনির্দিষ্টভাবে কারও বিরুদ্ধে আমাদের অভিযোগ নেই। তবে তাকে পূর্বপরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। পুলিশের সহযোগিতা চাই। আমরা মামলা করবো। তদন্ত করে আসল ঘটনা বের করে আনবে পুলিশ।

কুষ্টিয়া প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আনিসুজ্জামান ডাবলু বলেন, রুবেলের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করছি। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।

কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুজ্জামান তালুকদার জানান, দুপুরে সাংবাদিক হাসিবুর রহমান রুবেলের লাশ উদ্ধার করেছে নৌ পুলিশ। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কাউকে আটক করা যায়নি।

পাবনার ঈশ্বরদী নৌ পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) আবদুর রাজ্জাক বলেন, অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করে সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুত করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। গলায় একটি রশি প্যাঁচানোর মতো দাগ পাওয়া গেছে। তবে এখনই নিশ্চিত কিছু বলা যাচ্ছে না। ময়নাতদন্ত শেষে মৃত্যুর কারণ জানা যাবে।

প্রসঙ্গত, গত রবিবার রাতে কুষ্টিয়া শহরের সিঙ্গার মোড়ে তার পত্রিকা অফিসে ছিলেন রুবেল। ৯টার দিকে মোবাইল ফোনে একটি কল পাওয়ার পর অফিসের পিয়নকে ‌‘বাইরে থেকে আসছি’ বলে দ্রুত বেরিয়ে যান। এরপর থেকে তার মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়।

এ ঘটনায় রুবেলের ছোট ভাই ওইদিনই কুষ্টিয়া মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে সেতুর নিচে নদীতে তার লাশ ভেসে ওঠে। পরনের জামা-কাপড় ও মানিব্যাগে থাকা পরিচয়পত্র দেখে তাকে শনাক্ত করা হয়েছে।