পুলিশ সদস্যকে হত্যা: ৪ জনের যাবজ্জীবন

মেহেরপুরে পুলিশ কনস্টেবল আলাউদ্দিনকে হত্যার দায়ে চার জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়াও আসামিদের ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

একই ঘটনায় ফেনসিডিল রাখার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আসামিদের সাত বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড এবং ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়। অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়।

মামলার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অতিরিক্ত পিপি কাজি শহীদ জানান, বৃহস্পতিবার (২১ জুলাই) দুপুরে মেহেরপুরের অতিরিক্ত জেলা জজ আদালতের বিচারক রিপতি কুমার বিশ্বাস এ রায় দেন।

দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন– আনিস মণ্ডল, তাহাজুত হোসেন, শাকিল হোসেন ও রুবেল হোসেন।

মামলার বিবরণে জানা গেছে, ২০১৫  সালের ২৪ জুলাই গাংনী উপজেলার পিরতলা আইসি ক্যাম্পের এসআই সুবীর রায়ের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল বামুন্দি-কাজিপুর এলাকায় টহলে ছিলেন। সে সময় তারা গোপন সূত্রে খবর পান, ওই সড়ক দিয়ে মাইক্রোবাসে মাদকদ্রব্য পাচার করা হবে। তারা পীরতলা সাহেবনগর নামক স্থানে অবস্থান নিয়ে মাইক্রোবাসটিকে রাস্তায় কাঠের গুঁড়ি ফেলে ব্যারিকেড সৃষ্টি করেন। মাইক্রোবাসটি কাছাকাছি এসে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে কাঠের গুঁড়ি পাশ কাটিয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। সে সময় রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা পুলিশ কনস্টেবল আলাউদ্দিনকে মাইক্রোবাসটি ধাক্কা দিলে তিনি বাম্পারে আটকে যান। তাকে টেনেহিঁচড়ে ঘটনাস্থল থেকে প্রায় দেড় কিলোমিটার দূরে নিয়ে হাড়াভাঙ্গা সড়কে স্পিড ব্রেকারের কাছে ফেলে রেখে মাদক পাচারকারীরা পালিয়ে যায়। পরে তাকে উদ্ধার করে কুষ্টিয়ায় হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে কনস্টেবল আলাউদ্দিনের মৃত্যু হয়।

পরে ঘটনাস্থল থেকে ৩৪০ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করা হয়। কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার বলিদাপাড়া গ্রাম থেকে  মাইক্রোবাসটি উদ্ধার করে পুলিশ। ওই ঘটনায় এসআই সুবীর রায় বাদী হয়ে গাংনী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা প্রাথমিক তদন্ত শেষে আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন। হত্যা মামলায় মোট ১৬ জন সাক্ষী তাদের সাক্ষ্য দেন। সাক্ষীদের সাক্ষ্যে চার জন দোষী প্রমাণিত হওয়ায় তাদের প্রত্যেককে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

মামলায় আসামিপক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট আহসানুল আলম খোকন ও কামরুল হাসান।