জাতীয় শোক দিবসের আলোচনা সভায় কাজী নাবিল এমপি

বঙ্গবন্ধু সব সুবিধা প্রত্যাখ্যান করে মানুষের জন্য সংগ্রাম করেছেন

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনী আলোচনাকালে যশোর-৩ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) কাজী নাবিল আহমেদ বলেছেন, ‘বঙ্গবন্ধু এই উপমহাদেশের একমাত্র ব্যক্তি, যিনি সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা প্রত্যাখ্যান করে সাধারণ মানুষের অধিকার আদায়ে দীর্ঘ লড়াই-সংগ্রাম করেছেন।’

১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতাকালে সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ এসব কথা বলেন। যশোর জেলা প্রশাসনের আয়োজনে স্থানীয় শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খান।

জাতির পিতার সংগ্রামী জীবনের কথা তুলে ধরে অনুষ্ঠানে কাজী নাবিল বলেন, ‘৬ দফার আন্দোলনে বঙ্গবন্ধু যদি এক বা দুই দফা থেকে সরে আসতেন, তাহলে তিনি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হতে পারতেন। কিন্তু তিনি তা করেননি। মানুষের মুক্তির লড়াইয়ে তিনি কখনোই আপস করেননি। সে কারণে পাকিস্তানি জান্তা তাকে বছরের পর বছর জেলে বন্দি করে রাখে। লড়াই-সংগ্রামের দীর্ঘ পথপরিক্রমায় তিনি জাতির জনক হয়েছেন।’ 

তিনি বলেন, ‘১৯৭১ সালের ১৫ আগস্ট স্বাধীনতা যুদ্ধের পরাজিত শক্তি এবং তাদের এদেশীয় এজেন্টদের ষড়যন্ত্রে জাতির জনক ও তার পরিবার নৃশংস হত্যার শিকার হন। সারা বিশ্ব এই ঘটনায় হতভম্ব হয়ে যায়; বাঙালি জাতির জীবনে নেমে আসে কলঙ্ক। এরপর দীর্ঘ ২১ বছর সেই অপশক্তি বাংলাদেশকে মিনি পাকিস্তানে পরিণত করে, আমাদের শেখানো হয় ভুল ইতিহাস।’ 

বঙ্গবন্ধুর সব খুনির ফাঁসির রায় কার্যকরের দাবি জানিয়ে কাজী নাবিল বলেন, ‘জাতির জনকের সুযোগ্য উত্তরসূরি জননেত্রী শেখ হাসিনা রাষ্ট্রক্ষমতায় এসে খুনিদের বিচারের আওতায় এনে দেশকে, জাতিকে কলঙ্কমুক্ত করেছেন। এখনও বঙ্গবন্ধুর কতিপয় খুনি লিবিয়াসহ বিভিন্ন দেশে পালিয়ে রয়েছে। তাদের দেশে ফিরিয়ে ফাঁসির রায় কার্যকর করতে হবে।’

nabil

দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, ‘বৈশ্বিক পরিস্থিতির কারণে সরকার দেশে কৃচ্ছ্রসাধনে নানা পদক্ষেপ নিয়েছে। সে কারণে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, লোডশেডিং হচ্ছে। তবে খুব শিগগিরই এই পরিস্থিতি থেকে আমাদের উন্নয়ন হবে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, চীন-তাইওয়ানে যুদ্ধের দামামা আর করোনা মহামারিতে বিপর্যস্ত গোটা বিশ্বে এখন মুদ্রাস্ফীতি দেখা দিয়েছে। ঠিক সেই সময় আমাদের প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা কৃচ্ছ্রসাধনে সময়োচিত পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন।’   

তিনি বলেন, ‘সরকার ওএমএসে ১৫ টাকা কেজি দরে চাল বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দেশেও তা কমানো হবে।’ 

বিএনপি-জামায়াতের ষড়যন্ত্রের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে যে সময় দেশ সারা বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত হচ্ছে, ঠিক তখন দেশকে অস্থিতিশীল করতে সেই পরাজিত শক্তি নানামুখী ষড়যন্ত্র করে চলেছে। বিএনপির ভাইস চেয়ারপারসন বিদেশের মাটিতে বসে দেশকে সংঘাতের দিকে নিতে মিথ্যা তথ্য দিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে চলেছেন। তাদের সেসব মিথ্যা তথ্য, প্রপাগান্ডা আপনারা বিশ্বাস করবেন না।’ 

তিনি আগামী প্রজন্মের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘আপনারাই দেশের ভবিষ্যৎ। আপনারা সঠিক ইতিহাস জেনে জননেত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করার মাধ্যমে দেশকে এগিয়ে নেবেন।’ 

আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা শহিদুল ইসলাম মিলন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলাম মনির, জেলা শিক্ষা অফিসার একেএম গোলাম আজম, জেলা যুবলীগ সভাপতি মোস্তফা ফরিদ আহমেদ চৌধুরী, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের জেলা সভাপতি অধ্যাপক সুকুমার দাস, সাবেক উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আফজাল হোসেন দোদুল, প্রেস ক্লাব যশোরের সম্পাদক তৌহিদুর রহমান, সিভিল সার্জন বিপ্লব কান্তি বিশ্বাস প্রমুখ।