সরকারি শিশু পরিবারে শিক্ষার্থীদের নির্যাতনের অভিযোগ

টাঙ্গাইলে সরকারি শিশু পরিবারে (বালিকা) একাধিক শিক্ষার্থীকে বেত্রাঘাত ও কান ধরে উঠবস করানোর অভিযোগ উঠেছে। রবিবার (২৮ আগস্ট) সকালে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা জেলা প্রশাসকের কাছে মৌখিকভাবে এ অভিযোগ করে।

জানা গেছে, টাঙ্গাইল শিশু পরিবারে ৮৩ জন এতিম শিশু রয়েছে। এ ছাড়া একজন বৃদ্ধাও রয়েছেন। ৮২ জন শিশু বাইরের বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছে। শিশু পরিবারের দায়িত্বে থাকা সহকারী শিক্ষক বুশরাত জাহান সম্প্রতি একদিন বিদ্যালয়ে না যাওয়ার অভিযোগে একাধিক শিক্ষার্থীকে বেত্রাঘাত করেছেন। এ সময় শিশুদের কানধরে উঠবসও করানো হয়। শিশুরা প্রতিবাদ করলে শিক্ষকদের নির্যাতনের মাত্রা আরও বেড়ে যায়। ইতোমধ্যে বেত্রাঘাতে কয়েকজন শিশু অসুস্থ হয়েছে বলেও জানা গেছে।

রবিবার একাধিক শিক্ষার্থী টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসকের কাছে গিয়ে মৌখিকভাবে নির্যাতনের বিষয়টি জানায়। জেলা প্রশাসক ড. আতাউল গনি অভিযুক্ত শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী বলে, ‘আমরা এতিম হওয়ায় সরকারি শিশু পরিবারে থাকি। আর পাশের বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করি। বিদ্যালয়ে ক্লাস শেষে আবার এই কার্যালয়ে ফিরে আসি। এখানে শিক্ষকরা আমাদের দেখাশোনা করেন। একদিন বিদ্যালয়ে না যাওয়ার কারণে দায়িত্বে থাকা সহকারী শিক্ষক বুশরাত জাহান আমাদের একাধিকবার বেত্রাঘাত করেছেন। এ ছাড়াও ৫০০ বার কান ধরে উঠবস করিয়েছে।’

শিশুরা অভিযোগ করে, গত ঈদুল আজহায় শিশুদের নতুন পোশাক দেওয়া হয়নি। এখানে নিম্নমানের খাবার পরিবেশন করা হয়।

বিষয়টি নিয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক বুশরাত জাহান বলেন, ‘আমি তাদের ভালোর জন্যই শাসন করেছি। এ ধরনের ভুল আমার দ্বারা আর হবে না।’

টাঙ্গাইল সরকারি শিশু পরিবারের (বালিকা) উপ-তত্ত্বাবধায়ক তানিয়া আক্তার বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে ওই শিক্ষককে কারণ দর্শানোর চিঠি দেওয়া হয়েছিল। পরে তিনি সন্তোষজনক জবাব দিয়েছেন। বিষয়টি ভুল বোঝাবুঝি ছিল। এখন সমাধান হয়েছে।’

এ বিষয়ে জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. শাহ আলম বলেন, ‘জেলা প্রশাসক ড. আতাউল গনি বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখছেন। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

জেলা প্রশাসক বলেন, ‘শিশুরা আমার কাছে এসেছিল। বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে।’