ধর্ষণ মামলার পর মেয়র পলাতক

রাজশাহীর পুঠিয়ায় পৌর মেয়র ও সাবেক উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আল মামুন খানের বিরুদ্ধে আরও এক নারীকে ধর্ষণে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী বাদী হয়ে থানায় ধর্ষণ মামলা করেছেন। এদিকে থানা পুলিশ ভুক্তভোগীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাতে সোমবার (৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে পাঠিয়েছে। ঘটনার পর থেকে মেয়র আল মামুন পলাতক রয়েছেন।

থানা সূত্রে জানা গেছে, বর্তমান মেয়র ভুক্তভোগীর সঙ্গে জোর করে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্ক করেছেন। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ওই নারী বাদী হয়ে রবিবার দিবাগত রাতে থানায় ধর্ষণের একটি অভিযোগ দেন। সোমবার সকালে অভিযোগটি মামলাভুক্ত করা হয়েছে।

ভুক্তভোগী পুঠিয়া সদর এলাকার বাসিন্দা। অপরদিকে মেয়র আল মামুন গন্ডগোহালী গ্রামের আলী হোসেনের ছেলে।

ভুক্তভোগী বলেন, ‘গত এক বছর আগে পৌরসভায় একটি চাকরির জন্য মেয়রের কাছে গিয়েছিলাম। এরপর তিনি বিভিন্ন প্রলোভনে নিয়মিত ধর্ষণ করতেন। এক পর্যায়ে এই অনৈতিক কাজে রাজি না হওয়ায় তিনি আমাকে বিয়ের প্রলোভনে আরও কয়েকবার ধর্ষণ করেন। সম্প্রতি মেয়র আর আমাকে চাকরি দেবেন না এবং বিয়ে করবেন না বলে জানিয়ে দেন। বিষয়টি প্রতিবাদ করায় তার সন্ত্রাসী বাহিনীর লোকজন আমাকে প্রাণনাশের হুমকি দেয়। এ কারণে মেয়রের বিরুদ্ধে থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘মেয়র একজন চরিত্রহীন ব্যক্তি। তিনি ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে ও বিভিন্ন প্রলোভনে নিয়মিত বিভিন্ন নারীর সঙ্গে অসামাজিক কাজ করে আসছেন। তার বিরুদ্ধে আগেও থানায় ধর্ষণ মামলা হয়েছে।’

এ বিষয়ে পৌর মেয়র ও সাবেক উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আল মামুন খানের মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।

এ ব্যাপারে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি তদন্ত) আব্দুল বারী মেয়রের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘রবিবার রাতে একজন নারী বাদী হয়ে থানায় এই অভিযোগটি দায়ের করেন। সোমবার সকালে অভিযোগটি মামলাভুক্ত করা হয়েছে। ঘটনার পর মেয়রকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। তবে মেয়র পলাতক রয়েছেন।’

ওসি বলেন, ‘ভুক্তভোগী ওই নারীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাতে সোমবার দুপুরে রামেক হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।’

উল্লেখ্য, এর আগে, গত বছরের শুরুতে দুর্গাপুর উপজেলার একজন হাসপাতালের সেবিকাকে বিয়ের আশ্বাসে একাধিকবার ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে মেয়রের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন। পরে ওই সেবিকা সন্তানের পিতৃপরিচয়ের দাবি করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে গত বছর ১১ এপ্রিল মেয়রের লোকজন তাকে ব্যক্তিগত অফিসে তুলে এনে নির্যাতন করে। খবর পেয়ে পুলিশ ওই সেবিকাকে মেয়রের চেম্বার থেকে উদ্ধার করে। ওই রাতে ভুক্তভোগী বাদী হয়ে মেয়রকে আসামি করে থানায় একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন।