মুজিবনগর সরকারকে গার্ড অব অনার প্রদানকারী হামিদুল হকের মৃত্যু

মেহেরপুরের মুজিবনগর সরকারকে গার্ড অব অনার প্রদানকারী আনসার সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা হামিদুল হক মারা গেছেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ই্ন্না ইলাইহি রাজিউন)। মঙ্গলবার (৮ নভেম্বর) দিবাগত রাত দেড়টায় মুজিবনগর উপজেলার সোনাপুর গ্রামে নিজ বাড়িতে তার মৃত্যু হয়। তার বয়স হয়েছিল ৮২ বছর।

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, হামিদুল হক দীর্ঘদিন ধরে শ্বাসকষ্টজনিত রোগ অ্যাজমাসহ নানা রোগে ভুগছিলেন। তিনি তিন ছেলে, চার মেয়ে, নাতি-নাতনিসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

বুধবার সকাল সাড়ে ১১টায় সোনাপুর ঈদগাহ ময়দানে তার কফিনে জাতীয় পতাকা ও ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন মুজিবনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অনিমেষ বিশ্বাস, মুজিবনগর সরকারকে গার্ড অব অনার প্রদানকারী দুই আনসার সদস্য এবং মুক্তিযোদ্ধারা। পরে পুলিশের একটি চৌকস দল তাকে গার্ড অব অনার প্রদান করেন। এরপর সেখানে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জেলার সরকারি কর্মকর্তা, মুক্তিযোদ্ধাসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ জানাজায় অংশ নেন। জানাজা শেষে পার্শ্ববর্তী কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।

উল্লেখ্য, ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনার জন্য মেহেরপুরের মুজিবনগর আম্রকাননে (তৎকালীন বৈদ্যনাথতলা) গঠিত হয় মুজিবনগর সরকার। বাংলাদেশের প্রথম এই সরকারকে গার্ড অব অনার প্রদান করেন ১২ জন আনসার সদস্য। তাদের মধ্যে হামিদুল হক ছিলেন অন্যতম। এ পর্যন্ত ১০ জন আনসার সদস্যের মৃত্যু হয়েছে। বেঁচে রয়েছেন আজিমুদ্দীন শেখ ও সিরাজুল ইসলাম নামে আরও দুই আনসার সদস্য।

মুজিবনগর সরকারকে গার্ড অব প্রদানকারী আনসার সদস্য সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘হামিদুল হক দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন। রাতে নিজ বাড়িতে মারা যান। আমরা ১২ জন আনসার সদস্য বাংলাদেশের প্রথম সরকারকে গার্ড অব অনার প্রদান করেছিলাম। আজ হামিদুল হক চলে গেলেন। তাকে নিজ গ্রামে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন করা হয়েছে।’

হামিদুল হকের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন সরকারি কর্মকর্তা, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ।