চুয়াডাঙ্গায় ডায়রিয়ার প্রকোপ, রোগীদের ভোগান্তি

চুয়াডাঙ্গায় হঠাৎ করেই ডায়রিয়ার প্রকোপ দেখা দিয়েছে। প্রতিদিন গড়ে ৫০ জন রোগী চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল ভর্তি হচ্ছেন। হাসপাতালে শয্যা সংখ্যা কম হওয়ায় চিকিৎসা নিতে এসে ভোগান্তিতে পড়ছেন রোগী সাধারণ। চিকিৎসকরা বলছেন, আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে ডায়রিয়া আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে।

বর্তমানে সদর হাসপাতালে ৪৫ জনসহ জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে চারশর অধিক রোগী ভর্তি আছেন। প্রতিদিনই জেলার হাসপাতালগুলোতে নতুন রোগী আসছেন। সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা।

গত এক সপ্তাহে জেলায় ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। তবে সদর হাসপাতালের চিকিৎসকদের দাবি, ডায়াবেটিস ও হৃদরোগে আক্রান্ত ছিলেন হাসপাতালে মারা যাওয়া ওই নারী।

জনবল সংকটে রোগীর অতিরিক্ত চাপ সামাল দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে নার্সদেরও। রোগীর চাপে নাজেহাল হাসপাতালটির চিকিৎসাসেবা। এরই মধ্যে ফুরিয়ে গেছে কলেরা স্যালাইনের মজুত। তাই বাইরে থেকে কিনতে হচ্ছে স্যালাইন। এতে চিকিৎসা খরচ বাড়ছে রোগীদের। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, পর্যাপ্ত পরিমাণ কলেরা স্যালাইন চেয়ে চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে। একই সঙ্গে ডায়রিয়া থেকে রক্ষা পেতে নানা ধরনের পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা।

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল ঘুরে দেখা যায়, দুটি কক্ষ নিয়ে ডায়রিয়া ওয়ার্ড। এই ওয়ার্ডে কোনও শয্যা খালি নেই। মেঝেতে শিশুসহ রোগীদের থাকতে হচ্ছে। জায়গা না থাকায় বাইরের বারান্দার মেঝেতে রোগীদের চিকিৎসা চলছে।

রোগী ও স্বজনরা জানিয়েছেন, একটি কক্ষে ১০-১২ জন রোগীর চিকিৎসা চলছে। এতেও অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। শিশুদের হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা দিয়ে বাড়ি নিয়ে গেলে আবারও তারা আক্রান্ত হচ্ছে।

ডায়রিয়া ওয়ার্ডে কথা হয় সোহানুর সোহান নামে একজনের সঙ্গে। তিনি জানান, মৌলভীবাজার থেকে এসেই তার স্ত্রী ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হন। ওয়ার্ডে কোনও জায়গায় স্ত্রীকে রাখতে না পেরে শেষমেশ সিঁড়ির নিচে সামান্য জায়গা হয়েছে তার।

জনি নামে এক রোগীর সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, ‘হাসপাতাল থেকে কোনও ওষুধ দেওয়া হচ্ছে না। পরিবারের সদস্যরা বাইরে থেকে ওষুধ কিনে আনছেন।’ 

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের শিশু কনসালটেন্ট ডা. মাহাবুবুর রহমান মিলন বলেন, ‘শীতের সময় শিশুরা রোটা ভাইরাসজনিত রোগে আক্রান্ত হয়। এ সময় তাদের বিশেষ যত্নে রাখতে হবে।’

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আরএমও ডা. ফাতেহ আকরাম জানান, শীতজনিত কারণে ডায়রিয়ার রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। ডায়রিয়া রোগীদের চিকিৎসায় সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া আছে।