মোংলায় পণ্য খালাস বন্ধ, বিপুল অঙ্কের আর্থিক ক্ষতি ব্যবসায়ীদের

নৌযান শ্রমিকদের কর্মবিরতির ফলে টানা দুদিন ধরে মোংলা বন্দরে অবস্থানরত জাহাজ থেকে পণ্য খালাস বন্ধ রয়েছে। শনিবার দিবাগত মধ্যরাত থেকে এই কর্মবিরতি শুরু হয়। এজন্য জাহাজ থেকে পণ্য খালাস বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েছেন বন্দর ব্যবহারকারী ব্যবসায়ীরা। চরম আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ে তাদের অতিরিক্ত ডলার গুনতে হচ্ছে। 

মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের হারবার মাস্টার ক্যাপ্টেন শাহীন মজিদ বলেন, ‘বন্দরের চ্যানেলে বিভিন্ন পণ্য নিয়ে ১০টি বিদেশি জাহাজ অবস্থান করছে। নৌযান শ্রমিকদের কর্মবিরতির ফলে সেসব জাহাজ থেকে পণ্য খালাস বন্ধ করে রেখেছেন ধর্মঘট করা শ্রমিকরা। এতে এই বন্দরের সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা চরম আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন। জাহাজ ও পণ্য আমদানিসহ সব ক্ষেত্রে তাদের অতিরিক্ত টাকা গুনতে হচ্ছে।’

মোংলা বন্দর ব্যবহারকারী ব্যবসায়ী এসএম মোস্তাক মিঠু, মোস্তফা জেসান ভুট্ট, এইচএম দুলাল ও মশিউর রহমান জানান, ‘নৌযান শ্রমিকদের এই কর্মবিরতির ফলে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন তারা। বন্দরে অবস্থান করা জাহাজে পণ্য খালাস করতে শ্রমিকদের পাঠানোর পর ধর্মঘটের কারণে বসিয়ে বসিয়ে তাদের মজুরি পরিশোধ করতে হচ্ছে। জাহাজ থেকে পণ্য খালাস করার জন্য লাইটার ভাড়া করেও বিপদে পড়েছেন তারা। সেখানেও অতিরিক্ত ভাড়া গুনতে হচ্ছে। এমনিতেই দেশে ডলারের সংকট চলছে। তার ওপর বিদেশি জাহাজ ভাড়া করায় প্রতিদিন অতিরিক্ত ডলার চলে যাচ্ছে বিদেশে। সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের প্রতি এই পরিস্থিতির সমাধানের অনুরোধ জানান তারা।

মোংলা বন্দরের শিপিং এজেন্ট সৈয়দ জাহিদ হোসেন বলেন, ‘ডলার দিয়ে বিদেশি জাহাজ ভাড়া করে দেশে পণ্য আমদানি করতে হয়। সে ক্ষেত্রে একটি জাহাজ ২৫ হাজার ডলারে ভাড়া নিতে হয়। এরপর পণ্য খালাস করতে দুদিনের জায়গায় তিন দিন লেগে গেলে অতিরিক্ত এই ২৫ হাজার ডলার ক্ষতি গুনতে হয়। মোংলা বন্দরে ১০টি জাহাজে প্রতিদিন দুই লাখ ৫০ হাজার ডলার করে ড্যামারেজ গুনতে হচ্ছে  আমাদের।’ এই ক্ষতি ভোক্তা পর্যায় পর্যন্ত পৌঁছাবে বলেও জানান তিনি।

উল্লেখ্য, মজুরি বৃদ্ধিসহ ১০ দফা দাবি আদায়ে দ্বিতীয় দিনের মতো নৌযান শ্রমিকদের কর্মবিরতি চলছে। সোমবার মোংলার পশুর নদীর নৌ চ্যানেলে দেখা যায়, বিদেশি জাহাজের সঙ্গে পণ্য খালাসে অপেক্ষায় রয়েছে কয়েকশ’ লাইটার জাহাজ। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত শ্রমিকরা জাহাজ থেকে তাদের লাইটারে পণ্য নেবেন না।

এদিকে, বাংলাদেশ লাইটারেজ শ্রমিক ইউনিয়নের মোংলা শাখার সহ-সভাপতি মাইনুল হোসেন মিন্টু বলেন, ‘মালিকরা বেতন না বাড়ালে আর না খেয়ে থাকতে পারবো না। এবার বেতন বাড়াতেই হবে, না হলে আন্দোলন চলবে।’