শ্বশুরবাড়িতে যুবককে হত্যার অভিযোগ

মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলায় পঞ্চসার ইউনিয়নে শ্বশুরবাড়ি থেকে মনির হোসেন (২৯) নামে এক যুবকের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। সোমবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। স্বজনদের অভিযোগ, মনিরকে হত্যার পর মরদেহ ঝুলিয়ে আত্মহত্যা বলে চালানোর চেষ্টা করছে শ্বশুরবাড়ির লোকজন।

মনির চাঁদপুর জেলার হাইমচর উপজেলার চরভাঙ্গা এলাকার রহমান পাটোয়ারীর ছেলে। তিনি বিভিন্ন মেলায় ভাসমান চটপটির দোকান বসিয়ে ব্যবসা করতেন। চার বছর আগে মুন্সীগঞ্জের পঞ্চসার ইউনিয়নের জোড়পুকুরপাড় এলাকার ইউনুস শেখের মেয়ে শায়লা আক্তারের সঙ্গে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় তার। তাদের সংসারে তিন বছর বয়সী এক মেয়ে সন্তান আছে।

স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, মনির বিভিন্ন মেলায় চটপটির ব্যবসা করার কারণে বেশির ভাগ সময়ই বাড়ির বাইরে থাকতেন। কয়েকদিন পরপর বাড়িতে আসতেন। স্ত্রীর সঙ্গে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে প্রায়ই ঝগড়া হতো মনিরের। সোমবার রাতে মনির শ্বশুরবাড়িতে ছিলেন। ওই বাড়িতে মনিরকে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। সেখান থেকে শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাকে উদ্ধার করে মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসে।

মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক এমএ কালাম তালুকদার জানান, রাত ১০টার দিকে ওই ব্যক্তিকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন স্বজনরা। হাসপাতালে আনার আগেই তার মৃত্যু হয়েছে। তবে নিহতের গলায় ফাঁসের চিহ্ন রয়েছে। ময়নাতদন্ত মৃত্যুর কারণ শেষে বলা যাবে।

মৃতের মামাতো বোনের স্বামী গফুর আলী সরকার বলেন, ‘রাত সাড়ে ৯টার দিকে মনিরের স্ত্রীর বড় ভাই আল আমিন আমাকে ফোন করেন। তিনি জানান, মনির সেখানে উল্টাপাল্টা আচরণ করছে। তখন মোবাইল ফোনে মধ্যে অনেক চিৎকারের শব্দ শুনতে পাই। তারা আমাকে সেখানে যেতে বলেন। ২০-২৫ মিনিট পর পুনরায় ফোন করে গফুর জানান, মনির মারা গেছে। পাশ থেকে আরেকজন বলছিল ফাঁসিতে ঝুলে মারা গেছে।’

মৃতের মামাতো ভাই আল আমিন বলেন, স্ত্রী শায়লার সঙ্গে মনিরের বনিবনা ছিল না। তাদের মধ্যে ঝগড়াঝাটি হতো। মনিরের মাধ্যমে জানতে পারি, দুদিন আগেও স্ত্রীর সঙ্গে তার ঝামেলা হয়েছিল। মনির কোনোভাবে আত্মহত্যা করতে পারে না। তাকে তার স্ত্রী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন হত্যা করে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে রেখেছে।’

এ বিষয়ে মুন্সীগঞ্জ সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আনসার উজ্জামান জানান, ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ হাসপাতালে যায়। মৃতের গলায় ফাঁসির ছাড়া আঘাতের আর কোনও চিহ্ন দেখা যায়নি। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মুন্সীগঞ্জ জেলা হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে বোঝা যাবে, এটি হত্যা না আত্মহত্যা। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।