তিস্তার পানি বিপদসীমার ওপরে, নিম্নাঞ্চল প্লাবিত

উজানের পাহাড়ি ঢল ও কয়েক দিনের বর্ষণের কারণে শনিবার (৮ জুলাই) সকাল ৬টার দিকে নীলফামারীতে তিস্তা নদীর পানি বিপদসীমার ১৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। ফলে জলঢাকা ও ডিমলা এলাকায় তিস্তার তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এতে বসতবাড়িতে পানি উঠেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা।

অপরদিকে, সকাল ৯টার দিকে আট সেন্টিমিটার কমে তা বিপদসীমার পাঁচ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে ব্যারাজ পয়েন্টে পানি প্রবাহিত হয়। এরপর দুপুর ১২টার দিকে বিপদসীমা ছুঁই ছুঁই (বিপদসীমা ৫২.১৫), আবার বিকাল ৩টার দিকে বিপদসীমার চার সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে তিস্তার পানি প্রবাহিত হয়।

ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের পানি পরিমাপক (মিটার রিডার) মো. নূরুল ইসলাম বন্যার পানি উঠানামার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

স্থানীয়রা জানান, পানির প্রবাহ বেড়ে যাওয়ায় নীলফামারী ও লালমনিরহাটের নদী তীরবর্তী চরের অনেক বসতবাড়িতে পানি উঠেছে। এ ছাড়া ফসলের ক্ষেত পানিতে ডুবে যাওয়ায় ফসলের ক্ষতির শঙ্কায় রয়েছে কৃষকরা।

ডিমলার খালিশা চাঁপানী ইউনিয়নের পশ্চিম চরখালিশা গ্রামের মফিজুল ইসলাম বলেন, ‘তিস্তার পানি বাড়া কমায় চরাঞ্চলের ঘর-বাড়ি নিয়ে আমরা খুব দুশ্চিন্তায় রয়েছি।’

ওই ইউনিয়নের ছোটখাতার বাসিন্দা রহিদুল ইসলাম বলেন, ‘উজান থেকে আসা পানি ও গত কয়েক দিনের বর্ষনে তিস্তা নদীর পানি বেড়েছে। বাড়ি-ঘরে পানি উঠেছে, পরিবার-পরিজন নিয়ে বিপাকে পড়েছি।’

জানা যায়, গত সোমবার (৪ জুলাই) রাত ১০টার দিকে নদীর তীরবর্তী এলাকায় মাইকিং করে সতর্কতা জারি করেন স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বেলায়েত হোসেন বলেন, ‘পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, উজানের পাহাড়ী ঢলে পানি বাড়ায় ২৪ ঘণ্টা পানি বিপদসীমা অতিক্রম করার পূর্বাভাস আগে থেকেই ছিল। এ জন্য আমরা স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও গ্রাম পুলিশ দিয়ে সতর্ক করেছি।’

পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী আসফাউদ্দৌলা বলেন, ‘আজ হঠাৎ করে সকাল ৬টার দিকে বিপদসীমার ১৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে বন্যার পানি প্রবাহিত হয়েছিল। আবার বিকাল ৩টার দিকে (বিপদসীমার ৫২ দশমিক ১৫) চার সেন্টিমটিার নিচ দিয়ে নদীর পানি প্রবাহিত হচ্ছে। বন্যার পানি মোকাবিলায় ব্যারেজের ৪৪টি স্লুইসগেট খুলে দিয়ে পানি নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড বন্যা মোকাবিলায় সর্বদা প্রস্তত রয়েছে।’