ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশনের ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা বাঁশবাড়ি কলোনি। বেশ কিছুদিন আগেও বস্তি এলাকাটি ছিল অপরিচ্ছন্ন ও আবর্জনায় পরিপূর্ণ। ফলে বাতাসে ছড়ানো গন্ধে নাকমুখ চেপে চলাচল করতো মানুষ। কিন্তু এখন পাল্টে গেছে কলোনির চিত্রপট। ফুলের সুবাস ছড়িয়ে পড়ায় সবার নজর কেড়েছে এলাকাটি।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, কলোনির সড়কের দুই পাশের দেয়ালে ঝুলছে বাহারি সবুজ গাছ, ফাঁকে ফাঁকে শোভা পাচ্ছে হরেক রঙের ফুল। থোকায় থোকায় ফুল ফুটে ছড়াচ্ছে সুবাস। গাছের ফাঁকে সাঁটানো কাগজে লেখা- এ গাছগুলো বিক্রির জন্য নহে। চিকচিক করা সবুজ পাতার ফাঁকে ফুল যেন অন্য এক রূপ দিয়েছে বাঁশবাড়ি কলোনিকে। ফলে হেঁটে যেতে যেতে মনের অজান্তে অনেকেই থমকে দাঁড়াচ্ছেন; নান্দনিকতায় মুগ্ধ হচ্ছেন। খবর পেয়ে অনেকেই কলোনিতে ছুটে যাচ্ছেন, তুলছেন ছবি।
কলোনির বাসিন্দা কামরুল হাসান বলেন, ‘আগে সড়কটি ভালো ছিল না। দুই পাশে সবাই ময়লা-আবর্জনা ফেলত। দুর্গন্ধে অনেকে এ রাস্তা দিয়ে চলাচল করতো না। এখন সড়ক ভালো হওয়ায় পাশের দেয়ালগুলোতে গাছ লাগিয়ে সুন্দর করা হয়েছে। ফুলের সৌন্দর্য কলোনির চেহারাই পাল্টে দিয়েছে।’
উদ্যোক্তা মুরাদ হোসেন কানন বলেন, ‘সম্প্রতি কলোনির ভেতরের ভাঙা সড়ক ও ড্রেনেজ ব্যবস্থার আধুনিকায়ন করায় নোংরা সড়ক ও ড্রেন ঝকঝকে হয়েছে। এই পরিচ্ছন্নতা টিকিয়ে রাখতে সড়কের এক হাজার ফুট এলাকাজুড়ে দেয়ালগুলোতে সবুজায়নের পরিকল্পনা করা হয়। এখন পর্যন্ত ৮০০ ফুট সড়কের দুই পাশে হয়ে উঠেছে নান্দনিক বাগান।’
তিনি আরও বলেন, ‘ঘরের অব্যবহৃত ও ভাঙা ঝুড়ি, বালতি, মগ নানা কিছু দিয়ে তৈরি করা হয় টব। সেগুলো দেয়ালে আটকে লাগানো হয় হাসনাহেনা, পাতাবাহার, অর্কিডসহ নানা প্রজাতির সৌন্দর্যবর্ধক কয়েক হাজার গাছ। কলোনির এসব গাছ টিকিয়ে রাখতে ছোট-বড় সবাই মনোযোগী। কেউ গাছের পাতা বা ফুল ছেঁড়ে না। সবাই নিজ নিজ বাগানকে বড় করার প্রতিযোগিতায় ব্যস্ত।’
এ বিষয়ে ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের মেয়র ইকরামুল হক টিটু বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এলাকার বাসিন্দারা দেয়ালগুলোকে বাগানে রূপ দিয়েছেন। এটি সবার জন্যই অনুকরণীয়। এটি প্রমাণ করে, ইচ্ছা থাকলেই পরিবেশটা সুন্দর রাখা সম্ভব। আশা করব, নগরীর বাসিন্দারা তাদের বাসা বা এলাকাকে সবুজ ও ফুল দিয়ে সাজিয়ে তুলবেন। তাতে সুন্দর ও পরিবেশবান্ধব নগর গড়ে তোলা সম্ভব হবে।’