অতিরিক্ত ডিআইজির বিরুদ্ধে স্ত্রীর পক্ষে নির্বাচনি প্রচারণার অভিযোগ প্রমাণিত

সাময়িক বরখাস্ত বাংলাদেশ পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি হামিদুল আলম মিলনের বিরুদ্ধে বগুড়া-১ (সারিয়াকান্দি-সোনাতলা) আসনে স্ত্রী স্বতন্ত্র প্রার্থী শাহাজাদী আলম লিপির পক্ষে নির্বাচনি প্রচারণায় অংশ নেওয়ার অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। ওই আসনে নির্বাচনি অনুসন্ধান কমিটির চেয়ারম্যান এবং যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ মোসা. শাহনাজ পারভীন ওই অভিযোগের সত্যতা পেয়েছেন।

যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পেশকার আরিফুল ইসলাম বৃহস্পতিবার রাতে জানান, অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সচিবের কাছে সুপারিশ করা হয়েছে।

অভিযোগে জানা গেছে, বরিশাল মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (অতিরিক্ত ডিআইজি) হামিদুল আলম মিলন এক মাসের ছুটিতে বগুড়ায় এসে বগুড়া-১ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী স্ত্রী শাহাজাদী আলম লিপি পক্ষে কাজ করছেন। এ কাজে সরকারি গাড়ি ব্যবহার করা হয়। ওই আসনে সরকারদলীয় নৌকার প্রার্থী সাহাদারা মান্নান এমপি এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার বগুড়া জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলামের কাছে আবেদন করেন। এ ছাড়া গত ২ জানুয়ারি স্থানীয় একটি অনলাইন নিউজ পোর্টালে এ সংক্রান্ত রিপোর্ট প্রকাশিত হয়। বিষয়টি ওই আসনে নির্বাচনি অনুসন্ধান কমিটির চেয়ারম্যান বগুড়ার যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ মোসা. শাহনাজ পারভীনের নজরে আসে। তিনি হামিদুল আলম মিলনকে বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে তার কার্যালয়ে তলব করেন। সেখানে হাজির হয়ে জবাব দিতে নির্দেশ দেন।

এদিকে, এর আগে বৃহস্পতিবার সকালে পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি হামিদুল আলম মিলনকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্তের খবর পাওয়া যায়। তাকে পুলিশ অধিদফতরে সংযুক্ত করা হয়েছে। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশন সম্মতি দিয়েছে। বুধবার নির্বাচন কমিশনের উপসচিব মিজানুর রহমান স্বাক্ষরিত অনাপত্তিপত্র স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিবকে পাঠানো হয়। বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে তিনি আইনজীবী নিয়ে স্বশরীরে নির্বাচনি অনুসন্ধান কমিটির চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে হাজির হন। লিখিত জবাব/ব্যাখ্যা দিয়ে চলে যান। এ সময় তিনি উপস্থিত সাংবাদিকদের কাছে তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ দৃঢ়তার সঙ্গে অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘আমি হার্ট, ডায়াবেটিসসহ নানা রোগে ভুগছি। তাই ১২ ডিসেম্বর থেকে ২৮ দিনের মেডিক্যাল ছুটিতে বগুড়া শহরের বাসায় বিশ্রামে আছি।’

তিনি দাবি করেন, স্ত্রী বগুড়া-১ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও প্রচারণা শুরুর পর তিনি নির্বাচনি এলাকায় যাননি। স্ত্রী শাহজাদী আলম লিপির বিজয় ঠেকাতে একটি পক্ষ তার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তুলে ভোটারদের মাঝে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে।

বৃহস্পতিবার রাতে অনুসন্ধান কমিটির চেয়ারম্যানের আদালতের পেশকার আরিফুল ইসলাম জানান, অতিরিক্ত ডিআইজির বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে চেয়ারম্যান তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে নির্বাচন কমিশনে সুপারিশ করেছেন।