হলো না বাড়ি ফেরা, কমলগঞ্জে প্রাইভেটকারচাপায় চা শ্রমিক নারীর মৃত্যু

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার শমশেরনগর ইউনিয়নের কানিহাটি চা বাগান থেকে কাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে অজ্ঞাত প্রাইভেটকারচাপায় কুঞ্জ বালা মৃধা (৫৫) নামে এক নারী চা শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে।

শুক্রবার (১৫ মার্চ) বিকাল ৫টায় কমলগঞ্জ উপজেলার শমশেরনগর ভায়া চাতলাপুর সড়কের কানিহাটি নামক এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় কানিহাটি চা বাগানের শতাধিক চা শ্রমিক প্রায় দুই ঘণ্টা সড়কে বাঁশ ও আগুন জ্বালিয়ে অবরোধ করে। এতে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। প্রশাসনের পক্ষ হতে সুষ্ঠু বিচার ও গাড়ি আটকের আশ্বাস দিলে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় অবরোধ তুলে নেয় শ্রমিকরা।

চা শ্রমিক ছাত্র পরিষদ নেতা সৌরভ বীন জানান, প্রতি দিনের মতো কানিহাটি চা বাগানের নারী শ্রমিক কুঞ্জ বালা মৃধা চা বাগানের কাঁচা  পাতা তোলা শেষে বাড়ি ফিরছিলেন। কিন্তু শমশেরনগর ভায়া চাতলাপুর সড়ক পারাপারের সময় বিপরীতমুখী একটি প্রাইভেটকার দ্রুত গতিতে কুঞ্জ বালাকে চাপা দিয়ে পালিয়ে যায়। পরে তাকে স্থানীয় ক্যামেলিয়া হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে তার মৃত্যু হয়। খবরটি স্থানীয় চা বাগানে পৌঁছালে চা শ্রমিকরা বিক্ষুদ্ধ হয়ে ওঠেন। এ সময় তারা দল বেঁধে চাতলাপুর-শমশেরনগর সড়কে অবস্থান নিয়ে বাঁশ ও টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে বিচারের দাবিতে অবরোধ করেন। শ্রমিকরা নানা স্লোগান দিতে থাকেন। ঘাতক প্রাইভেটকারচালককে আটকের দাবি জানান। গোটা চা বাগানে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। যান চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে।

খবর পেয়ে শমশেরনগর পুলিশ ফাঁড়ির একদল পুলিশ অবরোধ প্রত্যাহার ও পরিস্থিতি শান্ত রাখার চেষ্টা করেন। কিন্তু চা শ্রমিকরা কোনোভাবেই রাজি হননি। পরে কমলগঞ্জ উপজেলা নিবার্হী অফিসার জয়নাল আবেদীনসহ পুলিশ ও জনপ্রতিনিধিরা চা শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে ঘাতক প্রাইভেটকারচালককে আটকের প্রতিশ্রুতি দিলে চা শ্রমিকরা প্রায় দুই ঘণ্টা পর অবরোধ তুলে নেন।

কানিহাটি চা বাগানের সাবেক ইউপি সদস্য বলেন, ওই রাস্তা দিয়ে দ্রুত গতিতে প্রতিনিয়ত বড় বড় ড্রাম ট্রাক ও বিভিন্ন যানবাহন চলাচল করে। এতে বাগান থেকে কাজ শেষ করে ফেরা চা শ্রমিকরা নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন। আজ এক চা শ্রমিকের করুণ মৃত্যু হলো। আমরা বিচার চাই।

শমশেরনগর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ইন্সপেক্টর শামীম আকঞ্জি বলেন, ঘটনার পরই চা শ্রমিকরা সড়ক অবরোধ করে। প্রায় দুই ঘণ্টা পর উপজেলা নির্বাহী অফিসার জয়নাল আবেদীনসহ আমরা শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে ঘাতক প্রাইভেটকারচালককে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতারের আশ্বাসে দিলে অবরোধ তুলে নেয় তারা। বতর্মানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। আমরা প্রাইভেটকার ও চালককে আটকের চেষ্টা করছি।