চমেক হাসপাতালে চার ঘণ্টার অভিযানে দালালচক্রের ৩৮ সদস্য আটক

চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে চার ঘণ্টার অভিযানে দালালচক্রের ৩৮ সদস্যকে আটক করেছে র‍্যাব। বুধবার (২০ মার্চ) সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত চমেক হাসপাতালে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়।

র‍্যাব-৭-এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক মিডিয়া মো. নূরুল আবছার বলেন, ‘ইদানীং লক্ষ করা যাচ্ছে, দেশের সরকারি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালগুলোতে দালালদের দৌরাত্ম্য দিন দিন বেড়েই চলেছে। সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে এ অভিযান চালানো হয়। অভিযানে ৩৮ জনকে আটক করা হয়েছে। এ সময় ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে তাদের মধ্যে ১৪ জনকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে এক মাসের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। বাকি ২৪ জনকে এক মাসের সশ্রম কারাদণ্ড এবং ৫ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ১৫ দিনের সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়।

‘আটক ৩৮ জন মূলত গ্রামের দরিদ্র ও অসহায়, যারা সরকারি চিকিৎসাব্যবস্থা সম্পর্কে অনভিজ্ঞদের টার্গেট করে। সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার অপ্রতুলতার কথা বলে রোগী এবং তাদের স্বজনদের মধ্যে এক ধরনের ভীতি সৃষ্টি করে বিভিন্নভাবে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।’

র‍্যাব কর্মকর্তারা জানান,  জেলা ও উপজেলা হাসপাতাল এলাকায় গড়ে ওঠা বেসরকারি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোর মালিকপক্ষ এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তি, সিএনজি অটোরিকশা এবং ইজিবাইক চালকদের নিয়ে দালালচক্র তৈরি করে থাকে। প্রায় প্রতিটি সরকারি হাসপাতালেই দালালচক্রের প্রভাব লক্ষণীয়। দালালরা সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসা ব্যবস্থার অপ্রতুলতার কথা বলে রোগীদের মধ্যে আস্থার সংকট তৈরি করে বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও হাসপাতালে নিয়ে যায়। এ ছাড়াও চিকিৎসকরা রোগীদের পরীক্ষা-নিরীক্ষা দিলে সেগুলো দ্রুত করিয়ে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে এবং কমিশন পাওয়ার আশায় বিভিন্ন কৌশলে বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টার নিয়ে যাচ্ছে। 

আটক দালালদের উদ্ধৃতি দিয়ে র‍্যাব কর্মকর্তারা জানান, সরকারি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসক রোগীর ব্যবস্থাপত্রে পরীক্ষার কথা লিখে দেওয়ার পর দালালরা স্বল্প খরচে সেগুলো করে দেওয়ার জন্য বিভিন্ন প্রাইভেট ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়ে যায়। একজন রোগী নিয়ে যেতে পারলে তারা ২০০ থেকে ৫০০ টাকা এবং পরিস্থিতি ভেদে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত কমিশন পেয়ে থাকে। দালালরা রোগীদের বিভ্রান্ত করে তাদের সুবিধামতো কথিত ক্লিনিক বা ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়ে যায়।