পড়ে থাকা তারে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে মা ও ২ শিশুসন্তানের মৃত্যু

বরিশালের বাকেরগঞ্জের নেয়ামতি ইউনিয়নের ডালমারা গ্রামে পল্লী বিদ্যুতের ছিঁড়ে পড়ে থাকা তারে মাসহ দুই শিশুসন্তানের মৃত্যু হয়েছে। শনিবার (২৭ এপ্রিল) দুপুরে এ ঘটনা ঘটে।

মৃত তিন জন হলেন– ডালমারা গ্রামের রিয়াজ মোল্লার স্ত্রী সোনিয়া বেগম (২৫), তার মেয়ে রেজবীনা (১২) এবং ছেলে সালমান (৯)।

বাকেরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ সাইফুর রহমান প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে জানান, শনিবার বেলা ১২টার দিকে মৃত সালমান ও রেজবীনা ডোবা সংলগ্ন গাছ থেকে লেবু পাড়ার সময় তা পানিতে পড়ে যায়। সালমান ওই লেবু আনতে গিয়ে পানিতে পড়ে থাকা তারে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়। সে সময় ছোটবোন ডাক-চিৎকার দিলে মা দৌড়ে ছেলেকে রক্ষা করতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন। পরে তাকে রক্ষা করতে গিয়ে মেয়েও বিদ্যুৎস্পৃষ্টে মারা যায়।

ইউএনও আরও জানান, খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিদ্যুতের ডিজিএম’কে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে। তারা বিষয়টি তদন্ত করে দেখছেন। এ ক্ষেত্রে কারও কোনও গাফিলতি থাকলে অবশ্যই কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। যাতে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে।

প্রতিবেশী মমতাজ বেগম বলেন, ‘বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে ডোবায় পড়ে ছিল। দুই ছেলে মেয়ে লেবু ছিঁড়লে তা ডোবায় পড়ে যায়। ওই লেবু আনতে পানিতে নেমে ছেলে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়। তখন মেয়ের চিৎকারে মা এসে তাকে উদ্ধার করতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়। তখন মেয়ে গিয়ে মাকে ধরলে সেও বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়।’

একাধিক প্রতিবেশী বলেন, ‘বিদ্যুতের তার বাগানের ওপর থেকে নেওয়ার সময় তাদের বারবার বলা হয়েছে এ তার ছিঁড়ে পড়লে দুর্ঘটনা ঘটবে। কিন্তু তারা কারও কথা শোনেনি। তাদের কারণেই আজ একই পরিবারের তিনটি প্রাণ চলে গেলো।’ তারা অভিযুক্তদের কঠোর শাস্তির দাবি জানান।

এ বিষয়ে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ বাকেরগঞ্জ অফিসের সহকারী জেনারেল ম্যানেজার সুবাস চন্দ্র দাস বলেন, ‘ঘটনা তদন্তে দুটি তদন্ত টিম গঠন করা হয়েছে। আগামী রবিবারের মধ্যে প্রতিবেদন পাওয়ার পর যাদের গাফিলতি প্রমাণিত হবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ‍আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’