হিজবুত তাওহীদের মসজিদ নির্মাণে স্থানীয়দের বাধা: উভয়পক্ষে নিহত ৩, আহত অর্ধশতাধিক

নোয়াখালীতে মসজিদ নির্মাণকে কেন্দ্র করে হিজবুত তাওহীদ কর্মীদের সঙ্গে গ্রামবাসীর ভয়াবহ সংঘর্ষে তিন ব্যক্তি নিহত ও অর্ধ শতাধিক লোক আহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে দু’জন হিজবুত তাওহীদের সদস্য এবং একজন স্থানীয় দিনমজুর। এ ঘটনায় নারী-পুরুষসহ ১১০ জনকে আটক করেছে পুলিশ।

সোমবার দুপুরের পর জেলার সোনাইমুড়ি উপজেলার চাষির হাট ইউনিয়নের পোরকরা গ্রামে এ সংঘর্ষ শুরু হয়। সন্ধ্যা পর্যন্ত উভয়পক্ষে এ সংঘর্ষ চলে।



নিহত হিজবুত তাওহীদ সদস্যদের নাম ইব্রাহিম খান রুবেল (২৭) ও মো. সোলায়মান (২৪)। অপরজন স্থানীয় দিনমজুর মো. মজিবুল হক (৪৮)। তার পিতার নাম মৃত মাজহার আলী। গুরুতর আহত অবস্থায় সোনাইমুড়ি উপজেলা হাসপাতালে আনার পর তার মৃত্যু হয়।

জানা গেছে, সোমবার সকাল ১১ টায় হিজবুত তাওহীদ সমর্থকরা তাদের নিজস্ব সম্পত্তিতে একটি মসজিদ নির্মাণের প্রস্তুতি নিলে এলাকাবাসী ঘটনাস্থলে এসে বাধা দেয়। এ সময় উভয় পক্ষে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে দু’পক্ষে তীব্র উত্তেজনা দেখা দেয় যা দুপুরের পরে সংঘর্ষে রূপ নেয়। সংঘর্ষে প্রতিপক্ষের হামলায় রুবেল ও সোলায়মান ঘটনাস্থলেই নিহত হন। এসময় হিজবুত তাওহীদ সদস্যদের হামলায় গুরুতর আহত হন মজিবুল। তাকে সঙ্গে সঙ্গে সোনাইমুড়ি হাসপাতালে পাঠানো হয়।

এ ঘটনায় বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী চাষির হাট বাজারে অবস্থিত হিজবুত তাওহীদের কার্যালয় ভাঙচুরসহ স্থানীয় একটি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে।

খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে ফাঁকা গুলি ছোঁড়ে ও লাঠিচার্জ করে  ৩ ঘণ্টা পর পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে গ্রামে এখনও উত্তেজনা রয়েছে। জেলা পুলিশ সুপার মো. ইলিয়াছ শরীফের নেতৃত্বে দাঙ্গা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।  অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এস এম আশরাফুজ্জামান রাতেও ঘটনাস্থলে রয়েছেন।

পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন জানিয়েছে, কয়েক বছর ধরে পোরকরা গ্রামে হিজবুত তৌহিদের কর্মীদের সঙ্গে স্থানীয় মুসল্লিদের নানা বিষয়ে বিরোধ চলে আসছে। মুসল্লিদের অভিযোগ, নেতা হুমায়ুন খান পন্নীর অনুসারী হিজবুত তাওহীদের কর্মীরা এলাকায় ইসলাম বিরোধী নানা কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছে। দুই বছর আগে স্থানীয় লোকজনের বাধার মুখে তারা এলাকা ছাড়া হয়। গত ২০ ফেব্রুয়ারি চাষির হাটে সমাবেশ করে তারা উস্কানিমূলক বক্তব্য দেয়। এতে লোকজন আরও ক্ষুব্ধ হয়ে উঠে। কয়েক দিন থেকে এ এলাকায় ওই সংগঠনের সঙ্গে জড়িত বহিরাগতদের আনাগোনা বাড়ে। এর পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার তারা নিজেদের মসজিদ বানানোর চেষ্টা করলে গ্রামবাসী বাধা দেয়।


 

পুলিশ জানায়, মৃতদেহগুলো ময়না তদন্তের জন্য নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

সোনাইমুড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হানিফুল ইসলাম জানিয়েছেন, বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। যে কোনও অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়ানোর জন্য অতিরিক্ত পুলিশ ও র‌্যাব মোতায়েন রয়েছে।

 

/টিএন/