ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, আহত অর্ধশতাধিক

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলা বিএনপির কাউন্সিলকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। সোমবার দুপুর ১টার দিকে এই ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষ চলাকালে চারটি মোটরসাইকেলে আগুন দেওয়াসহ কমপক্ষে ৩০টি দোকানপাট ভাঙচুর করা হয়। সংঘর্ষ আহতদের আশঙ্কাজনক অবস্থায় বাঞ্ছারামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। চার জনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, আগামী ২০ নভেম্বর বাঞ্ছারামপুর উপজেলার বিএনপির কাউন্সিলকে কেন্দ্র করে আজ সকাল থেকেই পুরো উপজেলায় উত্তেজনা বিরাজ করছিল। দুপুর ১টার দিকে বাঞ্ছারামপুর উপজেলার পল্লী বিদ্যুতের মোড় থেকে সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আব্দুল খালেক এবং অপর নির্বাহী সদস্য রফিক শিকদারের নেতৃত্বে সম্মেলনবিরোধী একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিলে রামদা, লাঠিসোঁটা নিয়ে হাজারো নেতাকর্মী অংশ নেন।

মিছিলটি উপজেলার প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে উপজেলা সদরের মুসা মার্কেট এলাকায় পৌঁছায়। সে সময় বিএনপির অপর গ্রুপ কেন্দ্রীয় কৃষক দলের যুগ্ম সম্পাদক মেহেদী হাসান পলাশের সমর্থকরা মিছিলটি লক্ষ্য করে ছাদের ওপর থেকে ইটপাটকেলসহ দেশি অস্ত্র-শস্ত্র দিয়ে হামলা চালান। এ সময় উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে। প্রায় ঘণ্টাব্যাপী এই সংঘর্ষ চলে। সংঘর্ষ চলাকালে বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেল ও কমপক্ষে ৩০টি দোকানপাট ভাঙচুর করা হয়।

তবে সংঘর্ষ চলাকালে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাউকে দেখা যায়নি।

এদিকে, সংঘর্ষে আহতদের মধ্যে কমপক্ষে ৩০ জনকে বাঞ্ছারামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। আহতদের মধ্যে উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জালাল উদ্দিন বাদল, যুবদলের মুসা হায়দায়, বিপ্লবসহ প্রায় ৫০ জন নেতাকর্মীকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে গুরুতর আহত চার জনকে ঢাকা মেডিক্যালে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে তাদের পরিচয় জানা যায়নি।

বাঞ্ছারামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসক সৈয়দ অলি মোহাম্মদ রাসেল জানান, আহতদের মধ্যে ২৫ জনের নাম হাসপাতালে নথিভুক্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া আরও ২৫ জনকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে সব মিলিয়ে অর্ধশতাধিক ব্যক্তিকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে গুরুতর আহত অবস্থায় চার জনকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

এদিকে, হাসপাতালে উপস্থিত বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট রফিক শিকদার বলেন, ‘এই ন্যক্কারজনক ঘটনার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানাই।’ পাশাপাশি বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাছেও বিচার দাবি করেন তিনি।

এই ঘটনায় পুরো উপজেলা জুড়ে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। বন্ধ রয়েছে উপজেলা শহরের দোকানপাট।

আগামী ২০ নভেম্বর পূর্ব নির্ধারিত কাউন্সিলে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভীর উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।