রেলক্রসিংয়ে ট্রেনের ধাক্কায় প্রাণ গেলো অনাগত সন্তানসহ মায়েরও

যাচ্ছিলেন অনাগত সন্তানের স্বাস্থ্যের অবস্থা জানতে চিকিৎসকের কাছে। পথে ট্রেনে কাটা পড়ে মারা গেলেন মা। আঘাতে পেট থেকে বেরিয়ে এলো অপরিপক্ব সেই সন্তান। এক দেহের দুজনেই হারালেন প্রাণ। মর্মান্তিক ঘটনাটি কুমিল্লার।

মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) কুমিল্লার বুড়িচংয়ে রেলক্রসিংয়ে দুর্ঘটনায় সাত জনের মৃত্যু হয়। তাদেরই একজন ওই মা শাহিনুর আক্তার (৩৩)। একই এলাকার সাত জনের আকস্মিক মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে উপজেলার বাকশিমুল ইউনিয়নে। মা আর অনাগত নবজাতকের মৃত্যুর হৃদয়বিদারক ঘটনায় শোকাতুর এলাকাবাসী।

শাহিনুর আক্তারনিহত শাহিনুর আক্তার ছিলেন আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা। তিনি উপজেলার বাকশিমুল পূর্বপাড়ার মনির হোসেনের স্ত্রী। শাহিনূরের রয়েছে ১০ বছরের আরও একটি সন্তান।

শাহিনুরের স্বামী মনির হোসেন বলেন, ‘১০ বছর আগে বিয়ে হয় আমাদের। মঙ্গলবার সকালে সে (শাহিনুর) অনাগত সন্তানের শারীরিক অবস্থা জানতে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে যাচ্ছিল। অটোরিকশায় চড়ে উপজেলার গাজীপুর এলাকায় যাচ্ছিল। কালিকাপুর রেলগেটে পৌঁছালে ট্রেনের ধাক্কায় ভেঙেচুরে যায় অটোরিকশাটি। শাহিনুরসহ সাত জনের মৃত্যু হয়।’

আক্ষেপ করে মনির বলেন, ‘প্রত্যক্ষদর্শীদের মাধ্যমে জানলাম, শাহিনূরের মরদেহ ছিন্ন-ভিন্ন হয়ে যায় এবং এক পর্যায়ে তার পেট থেকে বাচ্চাও বের হয়ে আসে। আমার স্ত্রীর এমন মর্মান্তিক মৃত্যু হবে ভাবতেও পারিনি! কতই না কষ্ট পেয়েছে তখন! তার কত স্বপ্ন ছিল সন্তানদের নিয়ে।’

ঘটনাস্থলে নিহতদের স্বজনদের আর্তনাদএর আগে, সকাল ১০টায় চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা ‘চট্টলা এক্সপ্রেস’ ট্রেনটি সকালে বুড়িচং উপজেলার কালিকাপুর রেলক্রসিং দিয়ে পার হওয়ার সময় যাত্রীবাহী অটোরিকশাকে ধাক্কা দেয়। ট্রেনের ধাক্কায় অটোরিকশায় থাকা চার যাত্রী ঘটনাস্থলে মারা যান। এ ছাড়া হাসপাতালে নেওয়ার পথে আরও এক যাত্রীর মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় আহত হওয়া তিন জনকে হাসপাতালে নিলে তাদের মধ্যে দুজন মারা যান। আরও একজন কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

আরও খবর: অটোরিকশায় ট্রেনের ধাক্কা, মৃত্যু বেড়ে ৭