যমুনা নদীর ওপর নির্মিত দেশের দীর্ঘতম রেলওয়ে সেতু ‘যমুনা রেলসেতু’ উদ্বোধন করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) বেলা ১১টা ৪০ মিনিটে সেতুর পূর্ব প্রান্তে ইব্রাহিমাবাদ স্টেশনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে রেলসেতুটি উদ্বোধন করেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ফাহিমুল ইসলাম। এর ফলে ঢাকার সঙ্গে উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলের রেল যোগাযোগে নতুন দিগন্তের সূচনা হলো। উদ্বোধনী স্পেশাল ট্র্রেনটি মাত্র সাড়ে তিন মিনিটেই রেলসেতু অতিক্রম করে।
৫০টি পিলার আর ৪৯টি স্প্যানের ওপর অত্যাধুনিক স্টিল প্রযুক্তির অবকাঠামোতে নির্মিত ডাবল লেনের সেতুটি জানান দিচ্ছে বাংলাদেশের সম্ভাবনাময় অগ্রযাত্রার কথা। ৪.৮ কিলোমিটার ডাবল লাইন ডুয়েলগেজ সেতুটি দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলকে ঢাকার সঙ্গে রেলপথের মাধ্যমে সংযুক্ত হয়েছে।
সেতুর পূর্ব প্রান্তে ইব্রাহিমাবাদ স্টেশন থেকে সিরাজগঞ্জ পশ্চিম প্রান্তের সয়দাবাদ রেলস্টেশন পর্যন্ত উদ্বোধনী ট্রেনে অতিথি ও সংশ্লিষ্টরা যমুনা রেল সেতু অতিক্রম করবেন। পরে সয়দাবাদ রেলস্টেশনে সংবাদ সম্মেলন করা হবে। সেখানে সংবাদ সম্মেলন শেষে ট্রেনটি ইব্রাহিমাবাদ রেলস্টেশন পূর্ব প্রান্তে ফিরে আসবে।
জানা গেছে, সেতু দিয়ে ১২০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চলাচল করতে পারবে। তবে উদ্বোধন উপলক্ষে প্রথম পর্যায়ে সেতু দিয়ে ৯০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চলাচল করবে। এতে সময় লাগবে সাড়ে ৩ মিনিট। এর আগে যমুনা সেতু দিয়ে ট্রেন পাড়ি দিতে ২০ মিনিট সময় লাগতো। গত ১২ ফেব্রুয়ারি সকালে রাজশাহী থেকে ছেড়ে আসা সিল্কসিটি এক্সপ্রেস ট্রেনটি প্রথমবারের মতো বাণিজ্যিকভাবে এই সেতুতে যাত্রী নিয়ে যাত্রা শুরু করে।
এ সেতুটি চালু হওয়ায় এখন উত্তরবঙ্গের সঙ্গে সারা দেশের রেল যোগাযোগ ও রেলওয়ে পরিবহন ব্যবস্থায় বড় পরিবর্তন আসবে। অভ্যন্তরীণ রেল যোগাযোগ বৃদ্ধির পাশাপাশি ট্রান্স এশিয়ান রেলপথে যুক্ত হওয়ার ক্ষেত্রে সক্ষমতা অর্জন করবে বাংলাদেশ। একই সঙ্গে দেশের উত্তরাঞ্চলের অর্থনীতিতে গতিসঞ্চার হবে। এতে আমদানি-রফতানি খরচ কমে যাওয়ার পাশাপাশি যমুনা সেতু ও মহাসড়কের ওপর চাপ কমবে। একই সঙ্গে উত্তরাঞ্চল থেকে পণ্য পরিবহন ব্যবস্থা সহজ হবে। যা এই অঞ্চলের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ও সামাজিক জীবনযাত্রায় ইতিবাচক পরিবর্তন ঘটাবে। আগে যমুনা সেতু দিয়ে ৩৮টি ট্রেন চলাচল করলেও নতুন সেতু দিয়ে ৮৮টি ট্রেন চলাচলের পাশাপাশি বিভিন্ন দেশের সঙ্গে ট্রেন চলাচলের আন্তসংযোগ সৃষ্টি হয়েছে।