স্কুলে পৌঁছানো হলো না নবম শ্রেণির ছাত্রী রুবাইয়া খাতুনের (১৫)। বাবার সঙ্গেই সড়কে মৃত্যু হয়েছে তার। বাবা ছিলেন সিএনজি অটোরিকশা চালক। মেয়ে নবম শ্রেণির ছাত্রী। প্রতিদিন সকালে মেয়েকে স্কুলে নামিয়ে দিয়ে সেই সিএনজি নিয়েই বাবা বের হন আয় রোজগারের আশায়। কিন্তু আজ ঘাতক বাসের চালক পেছন থেকে সিএনজিকে ধাক্কা দিলে ঘটনাস্থলেই মারা যান বাবা ও মেয়ে।
মঙ্গলবার সকালে ঠাকুরগাঁও-পঞ্চগড় মহাসড়কে একটি বেপরোয়া যাত্রীবাহী বাসের ধাক্কায় প্রাণ হারালেন বাবা আশরাফুল ইসলাম (৫২) এবং মেয়ে রুবাইয়া।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, ঢাকা থেকে পঞ্চগড়গামী ভিআইপি অটোমোবাইলসের একটি বাস (ঢাকা মেট্রো-ব ১৪-৮১৫২) তীব্র গতিতে আসছিল। বাসটি ভুল্লী এলাকার খোশবাজার মাদ্রাসার দক্ষিণে পোস্ট অফিসের কাছে পৌঁছালে সামনে থাকা একটি তিন চাকার ‘পাগলু’ গাড়িকে পেছন থেকে সজোরে ধাক্কা দেয়।
‘পাগলু’ গাড়িটি চালাচ্ছিলেন ঠাকুরগাঁওয়ের ভুল্লী থানার খুলিশাকুড়ি পোস্ট অফিস পাড়ার বাসিন্দা আশরাফুল ইসলাম। তার একমাত্র যাত্রী ছিল তারই আদরের মেয়ে রুবাইয়া খাতুন, বোদা পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী। বাবা তার মেয়েকে বোদায় স্কুলে পৌঁছে দিতে যাচ্ছিলেন।
বাসের ধাক্কায় ‘পাগলু’ গাড়িটি দুমড়েমুচড়ে যায় এবং সেটির চালক আশরাফুল ইসলাম ঘটনাস্থলেই মারা যান। তার নিথর দেহ পড়ে থাকে রাস্তার ওপর। গুরুতর আহত অবস্থায় ছটফট করতে থাকা মেয়ে রুবাইয়াকে স্থানীয়রা দ্রুত উদ্ধার করে ঠাকুরগাঁও জেনারেল হাসপাতালে নেওয়ার পথে সেও মৃত্যুর কাছে হার মানে। বাবা-মেয়ের এই আকস্মিক মৃত্যুতে তাদের পরিবার ও এলাকাবাসীর কান্নায় আকাশ-বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে।
এ বিষয়ে ভুল্লী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘খবর পেয়ে আমরা দ্রুত ঘটনাস্থলে উপস্থিত হই। এটি অত্যন্ত হৃদয়বিদারক একটি ঘটনা। বাসটিকে আটক করা গেলেও চালক ও তার সহকারী পালিয়ে গেছে। তাদের গ্রেফতারের জন্য আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে। বোদা হাইওয়ে পুলিশ এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’