ইভটিজিংয়ের অভিযোগে দুই ছাত্রকে নির্যাতন ওসির!

ঝালকাঠিঝালকাঠিতে ইভটিজিংয়ের অভিযোগে দুই মাদ্রাসা ছাত্রকে নির্যাতন করার অভিযোগ পাওয়া গেছে নলছটি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুলতান মাহমুদের বিরুদ্ধে। তবে ওসি সুলতান মাহমুদ ইভটিজিংয়ের সময় ওই দুই ছাত্রকে আটক করলেও নির্যাতনের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন।

এই দুই ছাত্র হলো- ছাব্বির (১৩) ও মো. ইমরান মোল্লা (১৩)।

জানা গেছে, পুলিশের নির্যাতনের শিকার হওয়া দুই ছাত্রের মধ্যে গুরুতর আহত অবস্থায় ছাব্বিরকে গত শনিবার রাতেই নলছিটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। আর মো. ইমরান মোল্লাকে চিকিৎসা শেষে বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

গত ২৩ অক্টোবর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহ মো. কামরুল হুদা হাসপাতালে ভর্তি ছাব্বিরকে দেখতে যান। তিনি আহত ও তার পরিবার সদস্যদের কাছ থেকে নির্যাতনের বর্ণনা শোনেন।

এ বিষয়ে ছাব্বিরের বাবা জাহাঙ্গীর হোসেন ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত ও শাস্তি দাবি করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ করেন। লিখিত অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, ‘গত ২২ অক্টোবর সকাল ৯টায় আমার ছেলে অষ্টম শ্রেণির ছাত্র মো. ছাব্বির (১৩) ও তার বন্ধু একই ক্লাসের মো. ইমরান মোল্লা বাইসাইকেলে করে গার্লস স্কুল সড়ক দিয়ে নলছিটি ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসায় যাচ্ছিল। পরে পথে থানা পুলিশ তাদের আটক করে থানায় নিয়ে যায়। সেখানে তাদের একদফা লাঠি দিয়ে পিটিয়ে থানা হাজতে রাখে। সকাল থেকে পানি বা কোনও ধরনের খাবার খেতে না দিয়ে সন্ধ্যা পর্যন্ত আটক রাখা হয়।’

অভিযোগে তিনি আরও উল্লেখ করেছেন, ‘বিকালে বিষয়টি জানতে পেরে থানায় যাই। সেখানে ওসির কাছে ছেলের অপরাধ জানতে চাইলে তিনি আমাকে গালাগাল করে বের করে দেন। এরপর ছাব্বিরকে ফ্লোরে শুইয়ে আবার লাঠি দিয়ে বেদম মারপিট করেন। পরে সন্ধ্যার পর ছাব্বির ও ইমরান মোল্লাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।’

তিনি আরও উল্লেখ করেন, ‘ছাড়া পাওয়ার পর আমি ছেলেকে নিয়ে সরাসরি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে গিয়ে ঘটনা জানাই। তিনি তাৎক্ষণিক বিষয়টি পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে বিষয়টি জানান এবং ছাব্বিরকে নলছিটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে হাসপাতালে ভর্তি করাতে বলেন।’

এ বিষয়ে নলছিটি থানার ওসি সুলতান মাহমুদ ছাত্রদের আটক রাখার কথা স্বীকার করলেও মারধর বা নির্যাতনের বিষয়টি অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘ইভটিজিং প্রতিরোধের লক্ষ্যে টিএসআইকে প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে ১০টা বালিকা বিদ্যালয়গুলোর সামনে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেওয়া আছে। সে অনুযায়ী এই দু’জনকে ইভটিজিংকালে আটক করা হয়। তবে সন্ধ্যায় তাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ থানায় আসলে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।’

এদিকে আটক দুই ছাত্রের মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলনা মুফতি দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বা কোনও অভিভাবক ওই ছাত্রদের বিষয়ে কোনও প্রকার ইভটিজিং বা অন্য কোনও অভিযোগ করেননি।’

আরও পড়ুন- 


দোকানের সঙ্গে ঝুলিয়ে স্কুলছাত্রকে নির্যাতন

/এসএনএইচ/এফএস/