মামুন হত্যার বিচার চায় পরিবার

potuaklhali২০০৪ সালের ২১ আগস্ট ভয়াবহ গ্রেনেড হামলায় অনেকের সঙ্গে নিহত হন পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলার আলীপুরা গ্রামের মোতালেব মৃধার ছেলে মামুন মৃধা। একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে মা মোর্শেদা বেগম যেন শোকে পাথর। দীর্ঘ ১৩ বছরেরও এ হত্যাকাণ্ডের বিচার শেষ না হওয়ায় হতাশ পুরো পরিবার।
পরিবার সূত্রে জানা গেছে, ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলায় নিহত ২৪ জনের মধ্যে নিহত হয় ঢাকার কবি কাজী নজরুল ইসলাম কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র মামুন মৃধা। মামুনের বাবা মোতালেব মৃধা ঢাকায় শ্রমিকের কাজ করতেন। ২০০৩ সালে এসএসসিতে পটুয়াখালীর দশমিনার বিবি রায় মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে ‘এ’ গ্রেড পাস করে ঢাকায় ভর্তি হয় মামুন। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বাবাকে জানিয়েই আওয়ামী লীগের জনসভায় যায় মামুন। গ্রেনেড হামলার খবর শুনে বাবা মোতালেব বাসায় ফিরে ছেলেকে না পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান। ছেলের খোঁজ না মেলায় ঢাকার আত্মীয় স্বজনদের বাসায় খোঁজ নেন। এরার রাত ১০টার দিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে ছেলের লাশের খবর মেলে।
এদিকে, দীর্ঘ ১৩ বছরেও বিচার না পাওয়ায় স্বজনদের সঙ্গে এলাকাবাসীও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। দ্রুত তারা এ হত্যাকাণ্ডের বিচার চান।potukhali-1
নিহত মামুনের বাবা মোতালেব মৃধা বলেন, ‘এক যুগ পর হয়ে গেছে আমার একমাত্র ছেলেকে হারিয়েছি। কিন্তু ছেলে হত্যার বিচার এখনও পাইনি। যারা আমার সন্তানকে হত্যা করেছে তাদের যেন আল্লাহ বিচার করেন।’
নিহত মামুনের মা মোর্শেদা বেগম বলেন, ‘যে সন্ত্রাসীরা আমার কোল থেকে আমার সন্তানকে নিয়া গেছে তাদের ফাঁসি চাই।’
নিহত মামুনের ছোট বোন তুলি মৃধা বলেন, ‘১৩ বছর হয়ে গেছে একমাত্র ভাইকে হারিয়েছি। ভাই মারা যাওয়ার পর মা শোকে পাথর হয়ে গেছেন। কেন যে বিচার এত দেরি হচ্ছে বুঝে উঠতে পারছি না।’
স্থানীয় মো. বারেক বলেন, ‘২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা বাংলাদেশের একটি কালো অধ্যায়। তাই মামুনকে যারা হত্যা করেছে তাদের ফাঁসি চাই।’
দ্রুত গ্রেনেড হামলার সঙ্গে জড়িতদের বিচার দাবি করেন দশমিনা সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইকবল মাহামুদ লিটন।
প্রসঙ্গত, ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সমাবেশ চলাকালে ভয়াবহ গ্রেনেড হামলায় অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যান তখনকার বিরোধীদলীয় নেত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। হামলায় আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের স্ত্রী আইভী রহমানসহ ২৪ জন নিহত হন। আহত হন দলের তিন শতাধিক কর্মী।

/বিএল/আপ-এআর/