বরগুনায় কলেজছাত্রীর সাত খণ্ড লাশ উদ্ধার

বরগুনাবরগুনার আমতলীতে এক কলেজছাত্রীর (১৭) সাত খণ্ড লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আমতলী পৌরশহরের হাসপাতাল রোডে অ্যাডভোকেট মাঈনুল আহসান বিপ্লব তালুকদারের বাসা থেকে ড্রামবন্দি অবস্থায় মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এ লাশ উদ্ধার করা হয়।

এ ঘটনায় আলমগীর হোসেন পলাশ (৪৫) নামের একজনকে আটক করেছে আমতলী থানা পুলিশ। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে পুলিশের কাছে খুনের কথা স্বীকার করেছে।

পলাশ পটুয়াখালী জেলার মির্জাগঞ্জ উপজেলার বাসণ্ডা গ্রামের মৃত আ. লতিফ হাওলাদারের ছেলে।

আমতলী থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বরগুনা সদর উপজেলার গুদিঘাটা গ্রামের আব্দুল মন্নান খানের মেয়ে  এবং কলাপাড়া মোজাহার উদ্দিন বিশ্বাস কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী মালার সঙ্গে বরগুনার ঘটবাড়িয়া আদর্শ কলেজের প্রভাষক আলমগীর হোসেন পলাশের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। সাত বছর আগে সপ্তম শ্রেণিতে পড়ার সময় থেকে মালার পরিচয় পলাশের সঙ্গে। গত ২২ অক্টোবর মালাকে নিয়ে পলাশ তার ভাগ্নিজামাই আমতলীর হাসপাতাল রোডের বাসিন্দা অ্যাডভোকেট মো. মাঈনুল আহসান বিপ্লব তালুকদারের বাসায় বেড়াতে আসেন। মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) সকাল ১০টার দিকে মাঈনুলের স্ত্রী তার ছেলেকে নিয়ে স্কুলে যায়। সকাল সাড়ে ১১টার দিকে মালাকে ধারালো বটি দিয়ে কেটে হত্যা করে পলাশ। পরে লাশ টুকরো টুকরো করে ড্রামে ভরে একটি ঘরে লুকিয়ে রাখে। পলাশ এই খুনের ঘটনা বিপ্লবকে জানায়। বিল্পব বিষয়টি আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শহীদ উল্যাহকে জানালে তিনি পুলিশ নিয়ে বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে অভিযান চালান। লাশ উদ্ধারের পর পলাশকে আটক করে থানায় নিয়ে যান।

পুলিশ জানিয়েছে, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পলাশ খুনের কথা স্বীকার করে বলেছে মালা তাকে বিয়ের জন্য চাপ দেওয়ায় সে তাকে খুন করেছে।

পুলিশ আরও জানায়, মালার বাবা-মায়ের ছাড়াছাড়ি হয়ে যাওয়ার পর তারা ঢাকায় থাকেন। বাবা-মায়ের অবর্তমানে মালা পূর্ব গুদিঘাটায় নানাবাড়িতে থেকে লেখাপড়া করছিল।

তবে মালার মামা হাবিব খান বলেন, ‘আমার বাড়ি থেকে তিন বছর আগে মালা ঢাকায় চলে গেছে। তার পরে শুনেছি সে লেখাপড়ার পাশাপাশি একটি হাসপাতালে চাকরি করে। এছাড়া মালার বিষয়ে আর কোনও খবর আমার কাছে নেই।’

লাশ উদ্ধারের খবর পেয়ে বরগুনার পুলিশ সুপার বিজয় বসাক পিপিএম, আমতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সরোয়ার হোসেন, আমতলী-তালতলী সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মো. আবদুল ওয়ারেছ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

বরগুনার পুলিশ সুপার বিজয় বসাক পিপিএম বলেন, ‘খবর পেয়ে অ্যাডভোকেট মাঈনুল আহসান বিপ্লবের বাসা থেকে কলেজছাত্রী মালার সাত টুকরা লাশ উদ্ধার করা হয়।  প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পলাশ খুনের কথা স্বীকার করেছে। আমরা আরও তদন্ত করে দেখবো এর সঙ্গে আরও কেউ জড়িত আছে কিনা। থাকলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

আরও পড়ুন- ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা