গৌরনদীতে যুবলীগ কর্মীদের হামলায় ছাত্রলীগ কর্মী নিহত

নিহত ছাত্রলীগ কর্মী সাকির

শিক্ষকদের গালাগাল করার প্রতিবাদ করায় যুবলীগ কর্মীরা সাকির গোমস্তা (১৭) নামে এক ছাত্রলীগ কর্মীকে পিটিয়ে হত্যা করেছে। মঙ্গলবার দুপুর ১টার দিকে বরিশালের গৌরনদী পৌরসভার স্কুল রোডে মাহাবুব হাওলাদারের দোকানের সামনে এ মারধরের ঘটনা ঘটে। গুরুতর আহত সাকির ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার রাত দেড়টার দিকে মারা যায়।

নিহত ছাত্রলীগ কর্মী সাকির গৌরনদী উপজেলা পরিষদের নাইট গার্ড ও উপজেলার আশোকাঠি গ্রামের আইয়ুব আলী গোমস্তার ছেলে। সে পালরদী মডেল উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এইচএসসি প্রথম বর্ষের (মানবিক) ছাত্র ছিল।

সাকির হত্যার প্রতিবাদে ও হত্যাকারীদের গ্রেফতারের দাবিতে বুধবার দুপুরে ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ প্রদর্শন ও মানববন্ধন করে।

অন্যদিকে, পৌর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক প্রিন্স বেপারি নিহত সাকিরকে ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী দাবি করলেও হামলাকারীরা যুবলীগের কেউ নয় বলে জানান।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ইভটিজিং ও মাদক সেবনের ঘটনায় শিক্ষকদের উদাসীনতা ও দায়িত্বহীনতার অভিযোগ এনে দক্ষিণ বিজয়পুর গ্রামের যুবলীগ কর্মী সোহেল গোমস্তা (২৮), রিয়াজ খান (২৫), ইলিয়াছ খান (২২), সুমন হাওলাদার (২৩) এমরান মির (২০) ও ফাহিমসহ অজ্ঞাতনামা আরও  ৫/৬ জন মঙ্গলবার দুপুরে স্কুল গেটে বসে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষসহ শিক্ষকদের গালাগাল করেন। এ সময় ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ তপন কুমার রায়ের সঙ্গে সোহল ও রিয়াজের বাকবিতণ্ডা হয়। সাকির শিক্ষকদের গালাগালের করার প্রতিবাদ কারায় তার সঙ্গেও রিয়াজ ও  সোহেলের তর্কাতর্কি হয়। এর জের ধরে রিয়াজ খান ও সোহেল গোমস্তার নেতৃত্বে যুবলীগের ১০/১২ জন কর্মী ধারালো অস্ত্র ও লাঠিসোটা নিয়ে মঙ্গলবার দুপুর ১টার দিকে পৌরসভার স্কুল রোডে মাহাবুব হাওলাদারের দোকানের সামনে সাকিরকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে।

সাকির হত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে মাববন্ধন

গৌরনদী থানার ওসি মনিরুল ইসলাম জানান, আহত সাকিরকে উদ্ধার করে প্রথমে গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। পরে চিকিৎসকরা তাকে বরিশাল শেরেবাংলা মেডিক্যাল কলেজ (শেবাচিম)হাসপাতালে রেফার করেন। শেবাচিম হাসপাতালে নেওয়ার পর তার অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসকরা তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে (ঢামেক) রেফার করেন। ঢামেক হাপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার রাত দেড়টার দিকে সাকির মারা যায়।

বুধবার সকালে এ খবর ছড়িয়ে পড়লে নিহত সাকিরের শতাধিক সমর্থক উত্তেজিত হয়ে লালিসোটা নিয়ে এলাকায় মহড়া দেয়। পরে তারা স্কুল রোডের মাহাবুব হাওলাদারের  মুদি দোকান ও আশোকাঠি এলাকার সোহেল মীরের ঘর ভাঙচুর করে।

গৌরনদী থানার ওসি মো. মনিরুল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। নিহত সাকিরের মা আলেয়া বেগম বাদী হয়ে ৬ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ১২ জনকে আসামি করে বুধবার গৌরনদী থানায় একটি হত্যা দায়ের করেছেন। পুলিশ এখনও কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি।

বরিশালের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মফিজুল ইসালাম ও র‌্যাবের একটি দল বুধবার দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। 

আরও পড়ুন: সোনারগাঁওয়ে ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণের সিডি বিতরণ