আগৈলঝাড়ায় টাকা ছাড়া মিলছে না নতুন বই

26553377_1413814142061274_785959524_nবিভিন্ন অজুহাতে ধার্য করা টাকা আদায় ছাড়া বরিশাল জেলার আগৈলঝাড়া উপজেলার কোনও কোনও স্কুলে মিলছে না সরকারের দেওয়া বিনামূল্যের নতুন বই। তাই নতুন বছরের প্রথমদিন স্কুলে এসে অনেক সহপাঠী বই পেলেও, খালি হাতে ফিরতে হয়েছে অনেক শিক্ষার্থীকে।
ফরম কেনা, ভর্তি ফি, পরীক্ষা ফি, ক্রীড়া, ঈদ-ই-মিলাদুন্নবী, সরস্বতী পূঁজা, পাঠাগার ও প্রতি বিষয়ে ফেল বাবদ টাকা স্কুল কর্তৃপক্ষ ধার্য করেছে। এসব টাকা পরিশোধ ছাড়া তাদের প্রমোশন ও বই বিতরণ আটকে দেওয়া হয়েছে।

বই উৎসবের দিন স্কুলের ধার্যকৃত টাকা শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আদায় না করার জন্য সরকারি নির্দেশ থাকলেও তা মানছে না স্কুলগুলো। যারা টাকা দিতে পারেনি সেইসব শিক্ষার্থীদের বই দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেছে অনেক শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা।

আগৈলঝাড়া উপজেলা সদরের শ্রীমতি মাতৃমঙ্গল বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার উপস্থিতিতেই স্কুলের ধার্যকৃত টাকা না দেওয়ায় শিক্ষার্থীদের বই দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন অভিভাবকরা।

আগৈলঝাড়ার উপজেলার পয়সা মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজের অষ্টম শ্রেণির ৩৩ রোল নং এর শিক্ষার্থী আঁখি আক্তারের মা সাফিয়া বেগম অভিযোগ করেন, স্কুলের ধার্যকৃত টাকা দিতে না পারায় তার মেয়ে ১ জানুয়ারি সকালে স্কুলে গিয়েও বই না পেয়ে খালি হাতে বাড়ি ফিরে এসেছে।

একই অভিযোগ করেছেন, অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী চাঁদনী আক্তারের অভিভাবক রাবেয়া বেগম।

ওই স্কুল অ্যান্ড কলেজ সূত্রে জানা গেছে, ষষ্ঠ শ্রেণিতে স্কুলের ধার্যকৃত ফি ধরা হয়েছে ৪৯০ টাকা, সপ্তম শ্রেণিতে ৫২০ টাকা, অষ্টম শ্রেণিতে ৫৭০ টাকা, নবম শ্রেণিতে ৬২০ টাকা ও দশম শ্রেণিতে ৪৭০ টাকা।

আগৈলঝাড়া উপজেলার কুয়াতিরপাড় গ্রামের খোকন চন্দ্র সমদ্দার অভিযোগ করেন, তার মেয়ে স্মৃতি সমদ্দার উপজেলা সদরের শ্রীমতি মাতৃমঙ্গল বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সপ্তম শ্রেণিতে উন্নীত হয়েছে। তার রোল নং ১৬। ৪০০ টাকা স্কুলে না দেওয়ায় তাকে বই দেওয়া হয়নি। বই না পেয়ে খালি হাতে ফিরে তার মেয়ে সারাদিন কেঁদেছে। তার মেয়ের মতো ওই এলাকার আরও অনেক শিক্ষার্থী বই না পেয়ে খালি হাতে বাড়ি ফিরেছে।

পয়সা মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজের অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান টাকা ছাড়া বই না দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘উত্তীর্ণের রেজিস্টারে নাম না-ওঠায় কেউ কেউ ওইদিন বই নাও পেতে পারে। তবে টাকা ছাড়া বই না দেওয়ার কোনও অভিযোগ আমার জানা নেই।’

আগৈলঝাড়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম বলেন, `বিষয়টি আমার জানা নেই। এ বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক মো. হাবিবুর রহমান বলেন, ‘বই উৎসবের দিন স্কুলে কোনও টাকা নেওয়া ঠিক নয়। কোনও স্কুল টাকা নিলে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নিজ নিজ উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’