বরিশালে ডিবিসি নিউজের ক্যামেরাপার্সন সুমন হাসানের ওপর হামলার ঘটনায় বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা শাখার অতিরিক্ত দায়িত্ব থেকে উপ-কমিশনার (ডিসি ডিবি) উত্তম কুমার পালকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। তাকে শুধু ডিসি ট্রাফিক হিসেবে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া গোয়েন্দা পুলিশের আরও পাঁচ সদস্যকে বরখাস্ত করেছে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ। বরিশাল মেট্রোপলিটনের (বিএমপি) কমিশনার এস এম রুহুল আমিন এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এ নিয়ে বরিশাল মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের ওই টিমে থাকা আট সদস্যই প্রথমে ক্লোজড এবং পরে তিন বারে সাময়িকভাবে বরখাস্ত হলো।
তারা হলো ডিবি পুলিশের উপ-পুলিশ পরিদর্শক (এসআই) আবুল বাশার, সহকারী উপ-পুলিশ পরিদর্শক (এএসআই) মো. আকতারুজ্জামান, স্বপন চন্দ্র দে, কনস্টেবল মাসুদুল হক (কং/৯৩৮), মো. আব্দুর রহিম (কং/৫৭৮), চৌধুরী রাসেল পারভেজ (কং/৬৬৮), মো. হাসান মাহমুদ (কং/৭০৭) ও কাজী সাইফুল ইসলাম (কং/৬৪৫)।
এদিকে সোমবার ডিবি পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি ডিবি) হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন মোহাম্মদ মোয়াজ্জেম হোসেন ভূঁইঞা।
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) সহকারী কমিশনার নাসিরউদ্দিন মল্লিক বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘সাংবাদিক সুমন হাসানকে নির্যাতনের ঘটনার পরপরই প্রথমে সংশ্লিষ্ট ডিবি টিমের সবাইকে ক্লোজড করা হয়।’
এরপর গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে ১৪ মার্চ সাময়িকভাবে বরখাস্ত হন পুলিশ কনস্টেবল মাসুদুল হক।
এরপর অপরাধের গুরুত্ব বিবেচনা করে ১৫ মার্চ আরও দুই জন অর্থাৎ আব্দুর রহিম ও চৌধুরী রাসেল পারভেজকে বরখাস্তের আদেশ দেওয়া হয়।
এদিকে সুমনকে নির্যাতনকারী ডিবি পুলিশের টিমের ওই আট সদস্যকে বরখাস্তের পাশাপাশি তাদের প্রত্যেককে আলাদাভাবে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। নোটিশের জবাব পাওয়ার পরে স্ব স্ব অপরাধ অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় বিভাগীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে বরিশাল মেট্রোপলিটান পুলিশ কমিশনার এস এম রুহুল আমিন নিশ্চয়তা দিয়েছেন।
অন্যদিকে দোষীদের স্থায়ী চাকুরিচ্যুতিসহ দৃষ্টান্তমূলক বিচারের দাবিতে সংবাদকর্মীরা তাদের আন্দোলন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়ে সোমবার মানববন্ধনসহ বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন।
গত ১৩ মার্চ দুপুরে অফিস থেকে বাসায় যাওয়ার পথে নিকটাত্মীয়কে গোয়েন্দা পুলিশের হয়রানি করার খবর পেয়ে সুমন হাসান নগরের বিউটি রোডে যান। ঘটনাচক্রে সেখানে থাকা ডিবি পুলিশ সদস্যরা তার ওপর ক্ষিপ্ত হয় এবং প্রকাশ্যে সুমন হাসানকে পেটাতে পেটাতে গাড়িতে তোলে। তাকে ক্রসফায়ারের হুমকি দেওয়া হয়। সুমন বর্তমানে শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
আরও পড়ুন: বরিশালে সাংবাদিক নির্যাতন, ৮ পুলিশ ক্লোজড