ভোলায় একই দিনে দু’দফায় কালবৈশাখী ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্তরা এখনও স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারেনি। মঙ্গলবার বিকাল ও রাতের দু’দফা কালবৈশাখী ঝড়ে জেলার লালমোহন ও মনপুরার ক্ষতিগ্রস্তরা এখনও খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছেন। রাতে কেউ কেউ আশ্রয় নিচ্ছেন আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে।
ভোলা জেলা প্রশাসক মো. মাসুদ আলম সিদ্দিক বুধবার ভোলার লালমোহন উপজেলার ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছেন। তিনি জানান, ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা প্রণয়নের কাজ চলছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের সহযোগিতা করা হবে।
লালমোহন পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডের ক্ষতিগ্রস্ত বাবুল মিয়া জানান, হঠাৎ করে ঝড় এসে সব লণ্ডভণ্ড করে দিয়েছে। এখন আমি কিভাবে আবার ঘর তুলবো তা ভেবে পাচ্ছি না। ‘ঝড়ের পর এখন পর্যন্ত সরকারি কিংবা বেসরকারি কোনোপক্ষ থেকেই সাহায্য পাইনি’, বলছিলেন একই উপজেলার মুহিমুনা নয়ন।
তিনি জানান, প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিটি পরিবারের জন্য নগদ ৩ হাজার টাকা ও ১ বান্ডিল ঢেউটিন বরাদ্দ করাসহ গৃহনির্মাণ সামগ্রী চেয়ে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া নিহত মো. শুক্কুর আলীর পরিবারকে নগদ ২০ হাজার টাকা দিয়ে তার মৃতদেহ মাগুরায় পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি লালমোহন সদর হাসপাতালে আহত ২ শিক্ষার্থীর চিকিৎসা চলছে।
ঝড়ে মনপুরার মহিলা মাদ্রাসাসহ ৪টি ইউনিয়নের ২ শতাধিক ঘরবাড়ি, দোকানঘর ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এছাড়া বিছিন্ন চরনিজাম ও কলতলির চরে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ঝড়ে নৌকা-ট্রলারসহ শতাধিক গাছপালাসহ রবি শস্যেরও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
হাজিরহাট ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ড দাসের হাটবেঁড়ী পাড়ের কৃষ্ণ দাস বলেন, ‘ঝড়ে ঘর পড়ে যাওয়ায় রাতে আত্মীয়দের ঘরে আশ্রয় নিয়েছি। ছেলে-মেয়ে নিয়ে এখনও খোলা আকাশের নিচে জীবনযাপন করছি।’
মনপুরা উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুল আজিজ ভূঁইঞা বলেন, ‘ঝড়ে উপজেলায় মাদ্রাসাসহ ঘরবাড়ির ক্ষতি হয়েছে। আমরা ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করছি। ত্রাণ এলে যথা সময়ে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে পৌঁছে দেওয়া হবে।’
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার দুপুরে লালমোহন ও মনপুরায় কালবৈশাখীর তাণ্ডবে ৫০টির বেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ ৫ শতাধিক ঘর-বাড়ি বিধ্বস্ত হয়। এসময় ঝড়ের কবলে পড়ে নিহত হয়েছেন এক ব্যবসায়ী। গাছপালা ও ঘরের চালা উপড়ে আহত হয়েছেন ৬ শিক্ষার্থীসহ অন্তত ১৮ জন। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ২০০ একরের বেশি জমির ফসল।