উজিরপুরে ইউপি চেয়ারম্যানকে হত্যা: এলাকায় উত্তেজনা





বিশ্বজিৎ হালদার নান্টু হত্যার পর বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসীবরিশালের উজিরপুর উপজেলার জল্লা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এবং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি বিশ্বজিৎ হালদার নান্টুকে শুক্রবার (২১ সেপ্টেম্বর) রাতে গুলি করে হত্যার পর থেকে ওই এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। এ ঘটনার পর থেকে স্থানীয় কারফা বাজারের অর্ধশতাধিক দোকান বন্ধ রয়েছে। শনিবার (২২ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে উজিরপুরের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন স্থানীয়রা।

এলাকাবাসী জানান, শুক্রবার রাত থেকেই কারফা বাজার এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পুলিশের সঙ্গে শনিবার সকাল থেকে দফায় দফায় স্থানীয়দের বাক-বিতণ্ডা হয়েছে। সকালে কারফা বাজারের সামনের সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করা হয়েছে। এরইমধ্যে পুলিশ বহনকারী একটি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। বাজারের একটি ভবনের পাশে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। ঝাড়ু নিয়ে মিছিল করেছেন স্থানীয়রা। এছাড়া উজিরপুরের ইচলাদিতে ঘাতকদের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।

নান্টুকে হত্যার পর উত্তেজনা কমাতে পুলিশবরিশাল জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হুমাউন কবির জানান, শুক্রবার রাত থেকে শনিবার দুপুর পর্যন্ত সিরাজ সিকদার, পান্না, আইয়ুব আলী, হরষিত এবং ওই ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক একজন সদস্যকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ কাজ করছে। এ ঘটনায় জল্লা পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ এবং একজন সাব ইন্সপেক্টরকে ক্লোজড্ করা হয়েছে বলেও জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার।

উজিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শিশির কুমার পাল জানিয়েছেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। নিহতের বাবা শুকলাল হালদার বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে শনিবার দুপুরে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।

স্থানীয়দের অভিযোগ– উপজেলা চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান ইকবাল এবং সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগ সম্পাদক তালুকদার মো. ইউনুসের পিএস আবু সাইদ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকতে পারেন। তবে পুলিশ বলছে, বিষয়টি তারা খতিয়ে দেখবে।

বিশ্বজিৎ হালদার নান্টু হত্যায় বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসীজেলা আওয়ামী লীগের নেতারা এবং স্থানীয় সংসদ সদস্য ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। স্থানীয় বাসিন্দা নির্মল বিশ্বাস জানান, এখানে আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দল আছে। পাশাপাশি মাদক ইয়াবার বিরুদ্ধে ইউপি চেয়ারম্যান অবস্থান নেওয়ায় অনেকেই তার বিরুদ্ধে চলে যান।

এদিকে, শনিবার দুপুর সোয়া ২টার দিকে নিহত চেয়ারম্যানের মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে জল্লা ইউনিয়ন আইডিয়াল কলেজ মাঠে নেওয়া হয়। সেখানে হাজারো মানুষ তার হত্যার সঙ্গে জড়িতদের শাস্তি দাবি করেন।

উল্লেখ্য, শুক্রবার রাতে উজিরপুরের জল্লা ইউনিয়নের কারফা বাজারে নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে দুর্বৃত্তদের গুলিতে নিহত হন ইউপি চেয়ারম্যান বিশ্বজিৎ হালদার নান্টু। এসময় গুরুতর আহত হন নিহার (৩৫) নামে অপর এক যুবক।