বরিশাল মহাশ্মশান রক্ষা কমিটির সভাপতি মানিক মুখার্জি কুণ্ডু জানান, ‘সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস, কালি পূজার আগের দিন ভূত চতুর্দশী তিথিতে পূজা অর্চনা করলে প্রয়াত ব্যক্তির আত্মা শান্তি লাভ করে। তাই আত্মার শান্তি কামনার পাশাপাশি প্রয়াত প্রিয়জনের উদ্দেশে তার সমাধিস্থলে নিবেদন করা হয় প্রয়াতের পছন্দের নানা ধরনের খাবার। সবকিছু করা হয় তিথি থাকা অবস্থায়। এছাড়া সমাধির পাশে মোমবাতি প্রজ্বালন করে প্রয়াতের আত্মার শান্তি কামনা করেন স্বজনরা।’
তিনি আরও জানান, ‘প্রতি বছর দেশ-বিদেশের স্বজনহারা মানুষ বরিশাল মহাশ্মশানে এসে প্রয়াত স্বজনদের আত্মার শান্তি কামনা করেন। মহাশ্মশান রক্ষা কমিটির নেতাদের আশা, আজ রাতে লক্ষাধিক লোকের সমাগম হবে বরিশাল মহাশ্মশানে।’
মহাশ্মশান রক্ষা কমিটি সূত্র জানায়, ৫ একর ৯৬ শতাংশ মহাশ্মশানের পুরনো শ্মশান অংশের অধিকাংশ সমাধি ধ্বংস হয়ে গেছে। তবে এখনও সেখানে ব্রাহ্মণদের ২/৩টি এবং রূপসী বাংলার কবি জীবনানন্দ দাসের বাবা সত্যানন্দ দাস ও পিতামহ সর্বানন্দা দাস, ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের অগ্নিপুরুষ বিপ্লবী দেবেন ঘোষ, ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের নেত্রী মনোরমা মাসি মা, শিক্ষাবিদ কালিচন্দ্র ঘোষসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তির সমাধি রয়েছে। নতুন পুরনো মিলিয়ে মহাশ্মশানে ৬১ হাজারেরও বেশি সমাধি রয়েছে। এরমধ্যে ৫০ হাজারের অধিক পাকা, ১০ হাজার কাঁচা মঠ এবং ৮শ’ মঠ রয়েছে যাদের স্বজনরা এই দেশে নেই। সেসব মঠ হলুদ রং করা হয়েছে। স্বজন না থাকা মঠগুলোতে কমিটির পক্ষ থেকে মোমবাতি প্রজ্বালন করা হবে।
কমিটি সূত্রে জানা যায়, ১৯২৭ সাল থেকে ওই স্থানে শ্মশান দীপাবলি উৎসব পালিত হয়ে আসছে। উপমহাদেশের মধ্যে এ মহাশ্মশানকে ঘিরে সবচেয়ে বড় শ্মশান দীপাবলি হয় বলে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের দাবি।