তালতলী উপজেলার আশার চর, পাথরঘাটা উপজেলার নতুন বাজার ও রুহিতা এলাকায় জেলার তিনটি বৃহৎ শুঁটকিপল্লি রয়েছে। এ তিন এলাকার হাজারও জেলে শুঁটকি উৎপাদনে জড়িত।
শুঁটকি উৎপাদনকারীরা জানান, প্রতিবছর মৌসুমের শুরুতেই পল্লিতে ছুটে আসেন পর্যাপ্ত ক্রেতা। কিন্তু এবার ভরা মৌসুমেও ক্রেতার দেখা নেই। এদিকে, শুঁটকি সংরক্ষণের কোনও ব্যবস্থাও নেই। এতে তাদের উৎপাদিত শুঁটকি স্থানীয় ক্রেতাদের কাছে অনেক কম মূল্যে বিক্রি করে দিতে হচ্ছে।
তারা সাগর ও নদী থেকে ভোল কোড়াল, রুপসা, বাইন, ছুরি, লইট্টা, পোয়া, ফ্যাসা, তপসী, বৈরাগী, ফাইলসাসহ আরও অনেক নাম না জানা মাছ শিকার করে প্রাকৃতিক উপায়ে শুঁটকি উৎপাদন করেন। মৌসুম শেষে যে আয় হয় তা দিয়েই টেনেটুনে চলে বছরের বাদবাকি দিনগুলো। ধারদেনা ও দাদন নিয়ে এই চরে আসেন জেলেরা। তবে এবছর এখনও ক্রেতার দেখা না পেয়ে ঋণ ও দাদনের টাকা কীভাবে শোধ করবেন তা নিয়ে দিশেহারা পড়েছেন।
বারেক হাওলাদার নামের এক শুঁটকি উৎপাদনকারী বলেন, ‘বছর বছর শুঁটকি ব্যবসায়ীর সংখ্যা কইম্মা যাইতেছে। এরকম চললে একসময় এই ব্যবসাই মোগো বন্ধ কইরা দেওয়া লাগবে।’
তারা আরও জানান, এইসব অঞ্চলে যদি সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে ফিডমিলসহ শুঁটকি প্রক্রিয়াজাতকরণ কেন্দ্র গড়ে উঠতো, তাহলে তাদের এত বিপাকে পড়তে হতো না।
স্থানীয় ব্যবসায়ী শহিদ আকন জানান, যোগাযোগ ব্যবস্থার দৈন্যদশার কারণে এই সব এলাকায় ব্যবসায়ীরা আর শুঁটকি কিনতে আসে না। এখান থেকে শুঁটকি কিনে শহর পর্যন্ত নিতে অনেক টাকা পরিবহনে চলে যায়। কিন্তু এর চেয়ে কক্সবাজারসহ অন্য জায়গা থেকে শুঁটকি কিনলে পরিবহন খরচ এত লাগে না।
এ বিষয়ে বরগুনার জেলা প্রশাসক কবীর মাহমুদ বলেন, ‘শুঁটকি শিল্প রক্ষা ও এর বিকাশে মৎস্য বিভাগের সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’