ধর্ষণের শাস্তি ৫০ জুতাপেটা ও ৩০ হাজার টাকা জরিমানা!

ধর্ষণ

বরিশাল সদর উপজেলার শায়েস্তাবাদ ইউনিয়নের দক্ষিণ পানবাড়ি গ্রামে এক কিশোরীকে (১৪) ওমর ফরাজী (৩৫) নামে এক ব্যক্তি ধর্ষণ করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিষয়টি জানাজানি হলে সোমবার (১৪ জানুয়ারি) বিকালে সালিশ বৈঠকের মাধ্যমে ওমরকে ৫০ বার জুতাপেটা ও ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। সালিশদাররা হচ্ছেন, সাবেক ইউপি সদস্য জসিম খান, চুন্নু হাওলাদার, আবুল খান, শাহজাহান খান, ওমর সরদার, শফিউদ্দীন হাওলাদারসহ স্থানীয় ব্যক্তিরা।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, গত ৮ জানুয়ারি ওমর ওই কিশোরীকে জানায় তার বিয়ের জন্য ছেলে দেখেছে। ওই ছেলে তার ঘরে বসা আছে। এরপর কিশোরীকে নিজ ঘরে ডেকে নিয়ে ধর্ষণ করে ওমর। পরে বিষয়টি জানাজানি হলে কিশোরীর বাড়িতে শালিস বৈঠক ডাকা হয়। বৈঠকে ওমরের দ্বিতীয় স্ত্রী শিউলি আক্তার স্বামীর বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেয়। এরপর ওমরকে ৫০ বার জুতাপেটা ও ৩০ হাজার টাকা জরিমানা নির্ধারণ করে সালিশদাররা।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, জুতাপেটা শুরুর পরই দৌড়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে ওমর। এরপর লোকজন ধাওয়া করে ওমরকে আটকে ১০/১২ বার জুতাপেটা করে ছেড়ে দেয়।
কিশোরীর পরিবারের দাবি, তারা মামলা করতে চাইলেও সালিশদারদের ভয়ে থানায় যেতে পারছেন না। ওমর ও তার পরিবারের লোকজন মামলা না করতে নানা ধরনের হুমকি দিচ্ছে। তারা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।

এ ব্যাপারে দক্ষিণ পানবাড়ি গ্রামের ইউপি সদস্য দুলাল মোল্লা জানান, ধর্ষণের ঘটনায় সালিশ বৈঠক হয়েছে বলে শুনছি। জরিমানা কিংবা জুতাপেটার কোনও ঘটনা ঘটেছে কিনা জানা নেই।

সাবেক ইউপি সদস্য জসিম খান বলেন, ‘এই মেয়েটির পরিবার গরিব। তারা আইনি প্রক্রিয়ায় যেতে পারছিল না। এজন্য আমরা সালিশ বৈঠক বসিয়ে একটি বিচার করেছি।’

আইনি ব্যবস্থা নিতে তারা সাহায্য করতে পারতো। কিন্তু কেন করেননি এ বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি এড়িয়ে যান। বলেন, ‘এটা আইনি পন্থায় ঠিক হয়নি।’

শায়েস্তাবাদ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আরিফুজ্জামান মুন্না বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। যদি কেউ এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়ে থাকে এবং আমার কাছে অভিযোগ দেয়, তদন্তসাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

বরিশাল মেট্রোপলিটন কাউনিয়া থানার ওসি আনোয়ার হোসেন বলেন, আমাদের কাছে লিখিত কিংবা মৌখিক কোনও অভিযোগ না আসায় কিছুই জানি না। তদন্ত করে ধর্ষকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন ওসি।