স্থানীয় ব্যবসায়ী মনির হাওলাদার ও জামাল হোসেন রাঢ়ি বলেন, জেলেদের পক্ষে টাকা দেওয়া সম্ভব না হওয়ায় তারা দু’জন মিলে টাকা দিয়ে তাদের ছাড়িয়ে আনেন।
টাকার বিনিময়ে ছাড়া পাওয়া জেলেরা হচ্ছেন, খোকন হাওলাদার, বোরহান সরদার, কাওছার তফাদার, চাঁন মিয়া, আলাউদ্দিন ও লালু ফকির ও ৪ বেদে জেলেসহ ১০ জন। জেলেরা পরে তাদের টাকা দিয়ে দেবে এই শর্তে তারা টাকা দিয়েছি।
জামাল হোসেন বলেন, ‘শুক্রবার ভোররাতে চরএককুরিয়া সংলগ্ন নদীতে মাছ শিকার করছিলেন জেলেরা। ভোর ৫টার দিকে মেহেন্দিগঞ্জ থানার এএসআই দেলেয়ারের নেতৃত্বে চার পুলিশ অভিযান চালায়। তারা জাল ও মাছসহ ১০ জেলেকে আটক করে পোলতাতলী ঘাটে নিয়ে যায়। আদালতে চালান দেওয়ার ভয় দেখিয়ে তাদের প্রত্যেকের কাছে ১০ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করেন। একইসঙ্গে আটক জেলেদের পরিবারের সদস্যদের খবর দেয় তারা। পরিবারের সদস্যরা ঘটনাস্থলে আসার পর আটক জেলেদের মুক্তির জন্য ১০ হাজার টাকা দিতে বলে পুলিশ। শেষ পর্যন্ত আমাদের দু’জনের মধ্যস্থতায় ৬৫ হাজার টাকার বিনিময়ে ১০ জেলেকে ছেড়ে দেয়। কিন্তু তাদের জাল ও মাছ নিয়ে গেছেন এএসআই দেলায়ার।’
তিনি আরও জানান, মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞার পর থেকেই এএসআই দেলোয়ার ব্যাপকহারে চাঁদাবাজি করছেন। এ অভিযোগে শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) সকালে পোলতাতলী বাজরে বিক্ষোভ করে স্থানীয়রা। তারা এএসআই দোলোয়ারকে চাঁদাবাজ আখ্যায়িত করে তার বিচার দাবি করেন।
এ বিষয়ে মেহেন্দিগঞ্জ থানার ওসি আবিদুর রহমান বলেন, ‘লালখাড়াবাদ নদীতে থানা পুলিশ কোনও অভিযান চালায়নি। ওই এলাকায় অভিযানের বিষয়ে কেউ অবহিতও করেনি আমাকে। তারপরও বিষয়টি খতিয়ে দেখে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম বলেন, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া মা ইলিশ রক্ষার নামে কেউ অপরাধে জড়িয়ে পড়লে তার বিরুদ্ধে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে এএসআই দেলোয়ার বলেন, শুক্রবার চরএককরিয়া কিংবা পোলতাতলী বাজারে তার ডিউটি ছিল না। তিনি ওই এলাকায় যাননি এবং কাউকে আটকও করেননি। এমনকি কারোর কাছ থেকে টাকাও নেননি। তার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ডিমওয়ালা মা ইলিশের প্রজনন নিরাপদ করতে ৯ অক্টোবর মধ্য রাত থেকে আগামী ৩০ অক্টোবর মধ্যরাত পর্যন্ত ২২ দিন দেশের ৭ হাজার বর্গকিলোমিটার নদীতে সব ধরনের মাধ শিকার, সংরক্ষণ, পরিবহন ও বিক্রি আইনগত দণ্ডনীয় অপরাধ।