বুলবুলের আঘাতে বরগুনায় ফসলের ব্যাপক ক্ষতি

ক্ষতিগ্রস্ত ধান ক্ষেতঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ এর আঘাতে বরগুনায় আমন ও শীতকালীন শাক সবজির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। জেলার ৬টি উপজেলায় প্রাথমিকভাবে ১০ শতাংশ কৃষির ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফদর সূত্রে জানা গেছে, এবছর জেলায় ৯৮ হাজার ৬৩৯ হেক্টর জমিতে আমন ধানের চাষ হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে ৯ হাজার ৮৬৩ হেক্টর জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া শীতকালীন শাক সবজি চাষ হয়েছে ১১ হাজার হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে নষ্ট হয়ে গেছে ৫৫০ হেক্টর জমির সবজি। পানের বরজ ও মরিচের বীজতলার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।

বরগুনা সদর উপজেলার বদরখালী ইউনিয়নের গুলিশাখালী গ্রামের শাহজালার বলেন, ‘এক একর জমিতে ধান চাষ করেছি। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে প্রবল বৃষ্টিতে ক্ষেতের অধিকাংশ ফসল তলিয়ে গেছে। এসব ফসল নষ্ট হয়ে যাবে।’

ক্ষতিগ্রস্ত ধান ক্ষেততিনি আরও বলেন, ‘ধার-দেনা করে ঋণ নিয়ে চাষাবাদ করেছি। ক্ষেতের ফসল নষ্ট হয়ে গেলে ছেলে-মেয়ে নিয়ে পথে বসতে হবে। যে অবস্থা দেখছি তাতে এই ফসল টেকানোর কোনও উপায় খুঁজে পাচ্ছি না।’

একই এলাকার কৃষক শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড়ে ধান ক্ষেতের মধ্যে যে পানি জমা হয়েছে তা যদি নিষ্কাশন না হয় তাহলে গাছের গোড়ায় পচন ধরবে। সেক্ষেত্রে আমাদের দুর্দশার শেষ থাকবে না।’

বুড়ির চর ইউনিয়নের লবনগোলা গ্রামের খাদিজা বেগম বলেন, সিম, বরবটি, পুঁইশাক, লাল শাক চাষ শুরু করেছিলাম।  কিন্তু প্রবল বর্ষণে ক্ষেত নষ্ট হয়ে গেছে। এখন আবার চাষাবাদ শুরু করলে সেই ফসল কখন পাবো তা কিছুই বলতে পারছি না।

ক্ষতিগ্রস্ত ধান ক্ষেতকৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মতিয়ার রহমান বলেন, ‘আমরা প্রাথমিকভাবে ক্ষয়ক্ষতি নির্ধারণ করেছি। এই ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কমবেশি হতে পারে। আমরা ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা তৈরি করে যতদ্রুত সম্ভব মন্ত্রণালয়ে ও জেলা প্রশাসন কার্যালয়ে পাঠানো করবো।’

জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ বলেন, বরগুনায় ঘূর্ণিঝড়ে কৃষিতে যে ক্ষতি হয়েছে সেসব এলাকায় জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের মাধ্যমে তালিকা প্রস্তুত করে সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক সাহায্য সহযোগিতা করা হবে।