এই কাজের উদ্যোক্তা হচ্ছেন বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) বরিশাল জেলার সদস্য সচিব ডা. মনীষা চক্রবর্তী। আর তাকে সহায়তা করছেন নগরীর রিকশা মালিক ও চালকরা। গত ১৫ নভেম্বর থেকে এ কার্যক্রম শুরু হয়।
নগরীতে চলাচলকারী ৭শ’ রিকশার মধ্যে সাড়ে ৩শ’ ব্যাটারিচালিত রিকশার পেছনে ২৫ জন মনীষীর বাণী সাঁটানো হয়েছে। বাণীর মধ্যে রয়েছে-
“বর দুর্লভ হইয়াছে বলিয়া কন্যা দায়ে কাঁদিয়া মরি কেন? কন্যাগুলিকে সুশিক্ষিতা করিয়া কার্যক্ষেত্রে ছাড়িয়া দাও, নিজের অন্নবস্ত্র উপার্জন করুক-বেগম রোকেয়া।”
“আইন মাকড়সার জালের মতো। ক্ষুদ্র কেউ পড়লে আটকে যায়, বড়রা ছিঁড়ে বেরিয়ে আসে-সক্রেটিস।”
শ্রমিক শ্রেণির ঐক্য আবশ্যক। ঐক্য কার্যকরী হয় একক সংগঠন মারফত, যার সিদ্ধান্ত সমস্ত সচেতন শ্রমিক পালন করে, ভয়ের তাড়নায় নয়, বিবেকের তাড়নায়-লেলিন।”
“বিজয়ের পথে আজীবন। হয় স্বদেশ নয় মৃত্যু। তুমি যদি প্রতিটি অবিচারের বিরুদ্ধে জ্বলে ওঠো, তাহলেই তুমি আমার একজন সহযোদ্ধা-চে-গুয়েভারা।”
“মোরা এক বৃন্তে দুটি কুসুম, হিন্দু-মুসলমান, মুসলিম তার নয়নমনি, হিন্দু তাহার প্রাণ-কাজী নজরুল ইসলাম”।
“বাংলার মুখ আমি দেখিয়াছি, তাই আমি পৃথিবীর রূপ খুঁজিতে চাই না আর-জীবনানন্দ দাশ।”
ডা. মনীষা চক্রবর্তী আরও বলেন, ‘এ জন্য আমরা এমন কয়েকজন মনীষীদের বাণী বাছাই করেছি যেগুলো শ্রমিকদের আন্দোলন, দেশপ্রেম ও মানুষের প্রতি ভালোবাসার কথা বলে। বাণীগুলো শ্রমজীবী মানুষের সঙ্গে সম্পর্কিত। এখানে যেমন শ্রমিক শ্রেণির মধ্যে ঐক্যের জন্য সচেতনতার কথা আছে, তেমনি রিকশার যাত্রীদের জন্যও ম্যাসেজ আছে।’
রিকশাওয়ালা সবাই কি এ ধরনের বাণীর অর্থ বুঝবে এমন প্রশ্নের জবাবে মনীষা বলেন, ‘সবাই হয়তো বুঝবে না। কিন্তু কারও কারও কাছে বিষয়টি বোধগম্য হবে। আমরা বলছি না যে শতভাগ সফল হবো। তবে অনেকটা সফলতা আসবে এটা আশা করা যায়। তাছাড়া বিতরণের সময় আমরা প্রত্যেককেই মনীষীদের বাণী সম্পর্কে ধারণা দিয়েছি।’
এ ব্যাপারে টিআইবি’র সহ-সভাপতি কবি হেনরী স্বপন বলেন, ‘এর চেয়ে ভালো কিছু হতে পারে না। যে কথাগুলো বইয়ের পাতায় ছিল তা আমাদের চোখের সামনে নিয়ে আসা হয়েছে। এমনকি চলাচলের পথে নগরবাসী চারটি লাইন পড়ে তার মর্মতা উপলব্ধি করতে পারছেন। এর জন্য উদ্যোক্তা এবং যারা মনীষীদের বাণী বহন করছেন তারা ধন্যবাদের চেয়েও বড় কিছু থাকলে তা পাওয়ার যোগ্য। আমি এ উদ্যোগকে শুভ উদ্যোগ বলতে চাই।’