রিফাত হত্যা মামলায় সাক্ষ্য দিলেন তদন্ত কর্মকর্তা

রিফাত শরীফবরগুনায় আলোচিত শাহনেওয়াজ রিফাত (রিফাত শরীফ) হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা হুমায়ূন কবির প্রাপ্তবয়স্ক ১০ আসামির বিরুদ্ধে আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন। এছাড়াও একই আদালতে সিআইডির আইটি শাখার নাজমুল হোসেন ও জাকির হোসেন ইমন নামে দুজন সাক্ষ্য দিয়েছেন।
মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বরগুনার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আছাদুজ্জামানের আদালতে এ সাক্ষ্য দেওয়া হয়। এ সময় তদন্ত কর্মকর্তার সাক্ষ্যগ্রহণ চলমান রেখে আদালত মুলতবি ঘোষণা করেন বিচারক। আগামীকাল বুধবার পুনরায় তার সাক্ষ্যগ্রহণ করা হবে।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, বরগুনার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে মঙ্গলবার সকালে সাক্ষ্য দেন সিআইডি আইটি শাখার নাজমুল হোসেন ও জাকির হোসেন ইমন নামে দু’জন। এরপর বরগুনা সদও থানা পরিদর্শক ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা হুমায়ূন কবিরের সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু করে আদালত সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে তদন্ত কর্মকর্তার সাক্ষ্যগ্রহণ চলমান রেখে আদালত মুলতবি করা হয়। সাক্ষ্যগ্রহণ চলাকালীন জামিনে থাকা আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নিসহ ৯ আসামি আদালতে উপস্থিত ছিল।
এর আগে ৬ নভেম্বর বরগুনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত থেকে এই মামলার বিচার শুরুর জন্য বরগুনা জেলা ও দায়রা জজ আদালতে পাঠানো হয়।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী পাবলিক প্রসিকিউটর ভুবন চন্দ্র হাওলাদার বলেন, ঢাকা থেকে আসা সিআইডি আইটি শাখার দু’জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ করেছেন আদালত। এছাড়াও মামলার তদন্ত কর্মকর্তার সাক্ষ্যগ্রহণ চলমান রেখে আদালত মুলতবি করা হয়েছে। এনিয়ে এখন পর্যন্ত রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় প্রাপ্তবয়স্ক ১০ আসামির বিরুদ্ধে ৭৪ জন সাক্ষী তাদের সাক্ষ্য দিয়েছেন।

প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের ২৬ জুন বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে নয়ন ও তার সহযোগী সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে রামদা দিয়ে কুপিয়ে রিফাত শরীফকে গুরুতর আহত করে। এরপর বীরদর্পে অস্ত্র উঁচিয়ে এলাকা ত্যাগ করে তারা। গুরুতর আহত রিফাত বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মারা যান।
গত ১ সেপ্টেম্বর রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় রিফাতের স্ত্রী মিন্নিসহ ২৪ জনের বিরুদ্ধে বরগুনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দুই ভাগে বিভক্ত অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দেয় পুলিশ। একই সঙ্গে রিফাত হত্যা মামলার এক নম্বর আসামি নয়ন বন্ড বন্দুকযুদ্ধে নিহত হওয়ায় তাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। গত ১ জানুয়ারি রিফাত হত্যা মামলার প্রাপ্তবয়স্ক ১০ আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করেন বরগুনা জেলা ও দায়রা জজ আদালত। অন্যদিকে গত ৮ জানুয়ারি রিফাত হত্যা মামলার অপ্রাপ্তবয়স্ক ১৪ আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করেন বরগুনার শিশু আদালত।
এ মামলার চার্জশিটভুক্ত প্রাপ্তবয়স্ক আসামি মো. মুসা এখনও পলাতক রয়েছেন। এছাড়া নিহত রিফাতের স্ত্রী মিন্নি ও অপ্রাপ্তবয়স্ক আসামি প্রিন্স মোল্লা উচ্চ আদালতের আদেশে এবং বরগুনার শিশু আদালতের আদেশে মারুফ মল্লিক, আরিয়ান হোসেন শ্রাবণ, মো. নাজমুল হাসান ও রাতুল শিকদার জয় জামিনে রয়েছে।