বরিশালে স্ত্রীর মরদেহ হাসপাতালে রেখে পালিয়েছেন স্বামী

শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, বরিশালবরিশালের গৌরনদী উপজেলার পশ্চিম চাঁদশী গ্রামে যৌতুকের দাবিকৃত টাকা দিতে না পারায় স্ত্রী ফাতেমা আক্তারকে (২২) বেদম নির্যাতনের পর মুখে বিষ ঢেলে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এরপর মরদেহ শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ফেলে পালিয়ে যায় স্বামীসহ শ্বশুড়বাড়ির লোকজন। মঙ্গলবার (২১ জুলাই) বিকেলে ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

নিহত ফাতেমা আগৈলঝাড়া উপজেলার বাশাইল এলাকার গিয়াস উদ্দিনের কন্যা। স্বামী মো. জসিম দর্জি গৌরনদী উপজেলার পশ্চিম চাঁদশী গ্রামের সেলিম দর্জির ছেলে।

ফাতেমা আক্তারের বাবা গিয়াস উদ্দিন জানান, দুই বছর আগে ফাতেমার সঙ্গে জসিমের বিয়ে হয় পারিবারিকভাবে। সিনথিয়া নামে তাদের দেড় বছরের এক শিশুকন্যাও রয়েছে। বিয়ের সময় ফাতেমার সুখের কথা চিন্তা করে জসিমকে দুই লাখ টাকা যৌতুক দেন। সেই টাকা শেষ হতে না হতেই ফাতেমার কাছে মোটা অঙ্কের টাকা যৌতুক দাবি করে স্বামী জসিম ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন। এ নিয়ে ফাতেমা ও জসিমের মধ্যে বাকবিতণ্ডা লেগেই থাকতো। ফাতেমার ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালাতো জসিম।

সর্বশেষ সোমবার বিকেলে যৌতুকের দাবিকৃত টাকার জন্য ফাতেমাকে বেদম শারীরিক নির্যাতন করে জসিম ও তার পরিবারের সদস্যরা। একপর্যায়ে ফাতেমা জ্ঞান হারিয়ে ফেললে মুখে বিষ ঢেলে দিয়ে গৌরনদী উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে যায় শ্বশুড়বাড়ির লোকজন। অবস্থার অবনতি হলে বিকেলেই শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তাকে প্রেরণ করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাতে ফাতেমার মৃত্যু হয়। এ ঘটনা স্থানীয় এক বাসিন্দা তাকে অবহিত করেছে।

তিনি আরও জানান, ফাতেমার মরদেহ হাসপাতালে রেখেই পালিয়ে যায় জসিমসহ শ্বশুড়বাড়ির লোকজন। পরবর্তীতে বিষয়টি মেডিক্যালের দায়িত্বরত পুলিশকে জানানো হলে মরদেহের ময়নাতদন্ত করা হয়। এ ঘটনায় গৌরনদী মডেল থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে জানান নিহতের পিতা।

গৌরনদী মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত ) মো. তৗহিদুজ্জামান জানান, এ বিষয়ে এখনও কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।