ভেঙে পড়লো নির্মাণাধীন উপজেলা পরিষদ ভবন

ভেঙে পড়া নির্মাণাধীন উপজেলা পরিষদ ভবনঝালকাঠির নলছিটিতে উন্নয়ন কাজে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া যায় হরহামেশা। নিম্নমানের কাজের কারণে সরকারি বরাদ্দের টাকা সঠিকভাবে কাজে লাগছে না উপজেলাবাসীর কাছ থেকে এমন অভিযোগ উঠেছে বিভিন্ন সময়। এবার খোদ উপজেলা পরিষদ চত্বরে নির্মাণাধীন অডিটোরিয়ামের কাজে বড় রকমের অনিয়মের অভিযোগ উঠলো।

বুধবার (১২ আগস্ট) সকালে এ ভবনের দেয়াল ভেঙে পড়ে। নলছিটি উপজেলা আওয়ামী  লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, নথুল্লাবাদ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কবির খলিফার মালিকানাধীন নির্মাণ প্রতিষ্ঠান ‘খলিফা এন্টারপ্রাইজ’ এ কাজ করছে বলে উপজেলা সূত্রে জানা যায়।

দেয়াল ভেঙে পড়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে উপজেলা জুড়ে আলোড়নের সৃষ্টি হয়। দুপুরে নলছিটি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. সিদ্দিকুর রহমান এলজিইডির প্রকৌশলীদের নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এ সময় তিনি প্রকৌশলীদের গুরুত্বের সঙ্গে কাজ তদারকি করার নির্দেশনা দেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, প্রায় সাড়ে ৬ কোটি টাকা ব্যয়ে নতুন উপজেলা কমপ্লেক্স ভবন ও অডিটোরিয়াম নির্মাণ কাজ চলছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উপজেলা পরিষদের একাধিক কর্মকর্তা জানান, প্রথম থেকেই নিম্মমানের নির্মাণ সামগ্রী দিয়ে কাজ শুরু করে তারা। এ নিয়ে আপত্তি জানালেও ঠিকাদার সরকার দলীয় ইউপি চেয়ারম্যান হওয়ায় কোনও সুরাহা হয়নি। হঠাৎ নির্মাণাধীন অডিটোরিয়ামের উত্তর পাশের ১০ ইঞ্চি পুরু দেয়াল ভেঙে পড়ে। এরপর ঘটনাটি পুরো উপজেলায় ছড়িয়ে পড়লে ঠিকাদারের লোকজন ভাঙা অংশের ইটগুলো দ্রুত অন্যত্র সরিয়ে ফেলেন।

তারা আরও জানান, এলজিইডি অফিস থেকে দায়িত্বপ্রাপ্তরা কাজটি তদারকিতে অবহেলা করেছেন। নিম্নমানের কাজের কারণেই নির্মাণাধীন দেয়ালটি ভেঙে পড়েছে। এ ঘটনায় স্থানীয় জনসাধারণের মাঝে ভবনটির নির্মাণ কাজের গুণগত মান নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। 

নলছিটি উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও খলিফা এন্টারপ্রাইজের সত্ত্বাধিকারী কবির খলিফা বলেন, ভিটিতে ড্রেজার দিয়ে বালু ফেলার কারণে চাপে দেয়াল ভেঙে গেছে।




এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলী (ভারপ্রাপ্ত) মীর মো. আকতারুজ্জামান বলেন, সাপোর্ট না থাকায় দেয়াল ভেঙে পড়েছে। নতুন করে দেয়ালটি তৈরি করে দেওয়ার জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। গাঁথুনির সমস্যার কারণে তাকে আগেই সতর্ক করা  হয়েছিল। কিন্তু দেয়ালের বাইরে সিলিং নষ্ট করে এবং স্তরে স্তরে একসঙ্গে বালু ফেলায় চাপে এটি ভেঙে গেছে। দেয়ালটি ভেঙে নতুন করে নির্মাণের জন্য ঠিকাদারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
নলছিটি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. সিদ্দিকুর রহমানের মুঠোফোনে কল করা হলেও তিনি কেটে দেওয়ায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।