সরেজমিনে দেখা গেছে, বরগুনা শহরের কাপড়, কসমেটিকস, জুতার দোকান থেকে শুরু করে মাছ ও কাঁচা বাজারসহ বিভিন্ন দোকানে মানুষের উপচে পড়া ভিড়। গা ঘেঁষে দাঁড়িয়ে কেনাকাটা করছেন লোকজন। কিছু কিছু দোকানে দোকানির মুখে মাস্ক দেখা গেলেও বেশিরভাগই মাস্ক-গ্লাভস কিছুই ব্যবহার করছেন না। মৎস্য বাজার ও কাঁচা বাজারের অবস্থা আরও ভয়াবহ। ছোট খাটো বাজার ও চায়ের দোকানগুলোয় কেউ মাস্ক পরছেন না বললেই চলে।
বরগুনা মাছ বাজারের এসে বিপাকে পড়েছেন হাফিজুর রহমান। তিনি মাস্ক, গ্লাভস পরে আসলেও বাজারে আসা বাকিদের দেখে তিনি হতাশ। বলেন, ‘মাছ বাজারে যেভাবে ক্রেতা-বিক্রেতারা বেচাকেনা করছেন তাতে করোনার হাত থেকে সুরক্ষিত থাকা দুষ্কর। এভাবে চলতে থাকলে শীতে পরিস্থিতি ভয়াবহ হতে পারে।’
মেয়ের জন্য শীতের পোশাক কিনতে আসা ইসরাত জাহান মানুষের ভিড়ে কেনাকাটা করতে হিমশিম খাচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘এত মানুষের মাঝে কীভাবে কেনাকাটা করবো। বাজারে মানুষের অস্বাভাবিক ভিড়। এমন হলে করোনা আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি। তখন পরিস্থিতি আরও অস্বাভাবিক হবে। আমাদের সতর্ক হওয়া উচিত।’
বরগুনা পাবলিক পলিসি ফোরামের আহ্বায়ক হাসানুর রহমান ঝন্টু বলেন, করোনায় সারাবিশ্ব বিপর্যস্ত। আমরা যদি নিজের এবং পরিবারের সুরক্ষার কথা চিন্তা করে একটু সচেতন হই তাহলেই কিছুটা হলেও এই মহামারি থেকে সুরক্ষিত থাকতে পারবো। তাই আমাদের ব্যক্তি সচেতনতা সবার আগে।
জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, করোনায় এ পর্যন্ত বরগুনায় মারা গেছেন ২০ জন। শহর ও গ্রাম গঞ্জের হাট-বাজারগুলোতে যেভাবে স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষিত হচ্ছে তাতে শঙ্কিত খোদ স্বাস্থ্য বিভাগ।
বরগুনার সিভিল সার্জন হুমায়ূন শাহিন খান বলেন, ‘করোনা আগামী দিনে কী পরিস্থিতি হবে তা আমরা কেউ বলতে পারি না। তবে আশঙ্কার জায়গা থেকে যদি বলি তাহলে আমাদের বরগুনার হাট-বাজারগুলোতে যেভাবে স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করা হচ্ছে সেটা শঙ্কার বিষয়। আমরা সাধারণ মানুষদের সচেতন করতে কাজ করে যাচ্ছি। মানুষকে মাস্ক ব্যবহারে আগ্রহী করে তুলতে কাজ করছি।’
জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার পর থেকে জেলা প্রশাসন ও এর অধীনস্থ সব প্রতিষ্ঠানে নো মাস্ক নো সার্ভিস চালু করা হয়েছে। কোনও ব্যক্তিকে সরকারি সেবা নিতে হলে তাকে অবশ্যই মাস্ক পরে আসতে হবে। জনগণের স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়টি মাথা রেখেই আমরা এই নির্দেশনা বাস্তবায়ন করছি।
তিনি আরও বলেন, হাটবাজরগুলো মাস্কের ব্যবহার নিশ্চিত করতে মাইকিং করে সচেতনতা বৃদ্ধি করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে জেলা প্রশাসনের মোবাইল কোর্টও পরিচালনা করা হচ্ছে। জনগণের স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়ে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।