বরিশালে হচ্ছে করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতাল

বরিশালে করোনা রোগীর চাপ বৃদ্ধি পাওয়ায় শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল হিমশিম খাচ্ছে। এজন্য বরিশাল জেনারেল হাসপাতালকে করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালের অনুমোদন দেওয়া হচ্ছে। সেখানে করোনা ওয়ার্ড করা হবে ১০০ শয্যার। সিভিল সার্জন কার্যালয় আশা করছে, দ্রুত সময়ের মধ্যেই স্বাস্থ্য অধিদফতরের এ নির্দেশ কার্যকর হবে।

করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালের হিসেবে কাজ শুরু হলে এ হাসপাতালে অন্য কোনও চিকিৎসাসেবা দেওয়া হবে না। সব ধরনের চিকিৎসা চলবে শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে।

এদিকে, করোনা রোগী বৃদ্ধি পেলেও যাতে চিকিৎসাসেবায় যাতে ব্যাঘাত না হয় সেজন্য বরিশাল জেনারেল হাসপাতাল ও শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে অক্সিজেন সংকট নিরসনে ব্যাপক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। 

রবিবার স্বাস্থ্য অধিদফতরের হাসপাতাল শাখার পরিচালক ডা. ফরিদ হোসেন মিয়া বলেন, ‘বরিশালের সিভিল সার্জন জেনারেল হাসপাতালকে করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতাল হিসেবে ব্যবহার করতে চাইলে মহাপরিচালক তাতে অনুমোদন দেন। অনুমোদন পাওয়ার পরপরই তা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। চলতি সপ্তাহের মধ্যে মন্ত্রণালয় তাদের কার্যক্রম সম্পন্ন করার সঙ্গে সঙ্গে সেটি করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালে রূপ নেবে। এ জন্য জেনারেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পাঁচটি আইসিইউ বেডসহ সংশ্লিষ্ট যন্ত্রপাতি চেয়েছে। তা প্রদানেরও চেষ্টা চলছে। এছাড়া জেনারেল হাসপাতালের জনবল দিয়েই চলবে ১০০ শয্যার করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালটি।’

তিনি আরও বলেন, ‘১০০ রোগীর মধ্যে ৮০ জনকে সেন্ট্রাল অক্সিজেন এবং বাকিদের বোতলজাত অক্সিজেনের সুবিধা দেওয়া হবে।’

শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আরও ২০ হাজার লিটার ধারণক্ষমতা অক্সিজেন সিলিন্ডার বসানো হয়েছেএ ব্যাপারে সিভিল সার্জন ও জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মনোয়ার হোসেন বলেন, ‘করোনার রোগীর চাপ বৃদ্ধি পাওয়ায় স্বাস্থ্য অধিদফতরের কাছে আবেদন করা হয়েছিল করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালের জন্য। দ্রুত সময়ের মধ্যে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক আবেদনটি গ্রহণ করেন।’

সিভিল সার্জন আরও বলেন, ‘যেহেতু বরিশাল জেনারেল হাসপাতাল ১০০ শয্যার, তাই আমরা করোনা ডেডিকেটেড হিসেবেও একশ শয্যাই চালু রাখবো। আশা করছি, দ্রুত সময়ের মধ্যে এ কার্যক্রম শুরু হবে। করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালের কার্যক্রম শুরু হলে ডায়রিয়াসহ সাধারণ রোগীদের চিকিৎসাসেবা বন্ধ থাকবে। ওই সময় তারা শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নেবেন।’

অপরদিকে, শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে করোনা রোগীর চাপ বাড়ায় সেখানকার ২০০ বেডের করোনা ওয়ার্ড ৩০০ বেডে উন্নীত করা হয়েছে।

হাসপাতালটির পরিচালক ডা. সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘করোনা রোগী চিকিৎসা সেবা যাতে কোনও ভাবে বাধাগ্রস্ত না হয় সেজন্য হাসপাতালে কেন্দ্রীয়ভাবে ৪০ হাজার লিটার অক্সিজেন ধারণক্ষমতার সিলিন্ডার রয়েছে। এ সিলিন্ডার সব সময় ভরে রাখা হয়। আরও ২০ হাজার লিটার ধারণক্ষমতা অক্সিজেন সিলিন্ডার বসানো হয়েছে। এ জন্য পাইপ লাইনের কাজ চলছে। রোগীদের জন্য আইসিইউ ওয়ার্ডে হাইফ্লো ন্যাজাল ক্যানুলা চালু আছে ২২টি। আরও ২২টি সংযোজনের কাজ চলছে। এতে করে রোগীদের অক্সিজেনের সংকট হবে না। এরপর রয়েছে ৪৩৪ বোতলজাত অক্সিজেন সিলিন্ডার। আরও ৭০০ বোতল চাওয়া হয়েছে।’

তিনি আরও জানান, একইভাবে বরিশাল জেনারেল হাসপাতালেও ১০ হাজার লিটার ধারণ ক্ষমতার অক্সিজেন সিলিন্ডার বসানো হয়েছে। সেখানেও চলছে পাইপলাইনের কাজ। তিনি আশা করছেন, অক্সিজেনের চাহিদা পূরণ হলে করোনা রোগীর চিকিৎসাসেবায় কোনও সমস্যা হওয়ার কথা নয়।