অভিযান-১০ লঞ্চের মালিকের বিরুদ্ধে মামলা

ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে লঞ্চে অগ্নিকাণ্ড ও হতাহতের ঘটনায় অভিযান-১০ লঞ্চের মালিক হাম জালাল শেখের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। মামলায় আরও ২৫ জনকে অজ্ঞাত আসামি করেছেন বাদী।

বরগুনার এম বালিয়াতলী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নাজমুল ইসলাম নাসির বাদী হয়ে রবিবার (২৬ ডিসেম্বর) সকাল ৯টায় বরগুনার মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে মামলার আবেদন করেন। বিচারক মুহাম্মদ মাহবুব আলম আবেদন গ্রহণ করে বেলা ১১টার দিকে সংশ্লিষ্ট থানায় মামলাটি এজাহার হিসেবে গ্রহণের আদেশ দেন।

আদালতের প্রশাসনিক কর্মকর্তা আখতার হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

মামলার আইনজীবী সাইফুর রহমান সোহাগ বলেন, ‘লঞ্চে আগুনের ঘটনায় মালিকসহ স্টাফদের গাফিলতি সুস্পষ্ট। আলোচিত এ ঘটনায় বাদী সংক্ষুব্ধ হয়ে মামলার আবেদন করেছিলেন। আদালত আবেদন গ্রহণ করে মামলাটি এজাহার হিসেবে নেওয়ার জন্য থানাকে আদেশ দিয়েছেন।’

মামলার বাদী নাজমুল ইসলাম নাসির বলেন, ‘বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের তথ্যে আমি নিশ্চিত হয়েছি, আসামিদের গাফিলতির কারণে আগুন, মৃত্যু, আহত ও ক্ষয়ক্ষতির ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় মালিকসহ সংশ্লিষ্টদের বিচার হওয়া উচিত বলে মনে করেছি। ন্যায়বিচারের স্বার্থে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মামলাটি করেছি। আমি এ মামলার আসামিদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানাচ্ছি।’

সদরঘাট থেকে বৃহস্পতিবার (২৩ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৬টায় বরগুনার উদ্দেশে যাত্রা শুরু করে অভিযান-১০ লঞ্চ। এরপর থামে চাঁদপুর, বরিশাল ও দপদপিয়া ঘাটে। তিন ঘাটেই যাত্রীরা ওঠানামা করেছেন। দপদপিয়া থেকে লঞ্চটি ছাড়ে বেতাগীর উদ্দেশে। এর মাঝেই বাধে বিপত্তি। রাত ৩টায় সুগন্ধা নদীতে চলমান লঞ্চের ইঞ্জিন কক্ষে আগুনের সূত্রপাত হয়। পানিতে ভাসমান এই যানে মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়ে আগুন। প্রাণে বাঁচতে যাত্রীরা ঝাঁপ দিতে থাকেন সুগন্ধা নদীতে। এতে অনেকে প্রাণে বাঁচলেও এখন পর্যন্ত ৩৭টি লাশ উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিস। আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন শতাধিক। এদের মধ্যে অনেকের অবস্থা গুরুতর। উদ্ধার করা লাশের মধ্যে ২৩টির পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি। এসব লাশের নমুনা সংগ্রহ করে শনিবার বরগুনার পোটকাখালী গ্রামে খাকদোন নদীর পাড়ে গণকবরে দাফন করা হয়েছে। পরিচয় মিলেছে এমন ১৪ জনের লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছে প্রশাসন।