এলজিইডি’র ভুলের খেসারত দিচ্ছে শিক্ষার্থীরা

বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার পূর্ব সুজনকাঠি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নতুন ভবন নির্মাণের জন্য পুরাতন ভবন ভেঙে ফেলা হয়েছে। কিন্তু গত এক বছরেও ভবন নির্মাণকাজ শুরু হয়নি। পরে জানা যায় উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ ভবন নির্মাণের জন্য যে দরপত্র আহ্বান করেছিল, তা ওই বিদ্যালয়ের জন্য নয়। এলজিইডি’র এই ভুলের খেসারত দিচ্ছে শিক্ষার্থীরা। 

গত এক বছর ধরে একটি টিনশেড ঘরে গাদাগাদি করে ক্লাস করছে তারা। এ কারণে অনেক শিক্ষার্থী অন্যত্র চলে যাচ্ছে। এতে শিক্ষার্থী সংকট দেখা দিয়েছে বিদ্যালয়টিতে।

প্রধান শিক্ষক বিরাট চন্দ্র ভদ্র বলেন, ‘বিদ্যালয়টিতে শিশু থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠদান করা হয়। বর্তমানে দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী রয়েছে। ক্লাসরুম সংকটের কারণে নতুন ভবন নির্মাণের দরপত্র আহ্বান করে এলজিইডি বিভাগ। নতুন ভবন নির্মাণের জন্য পুরাতন দুই কক্ষ বিশিষ্ট ভবনটি গত এক বছর আগে ভেঙে ফেলা হয়। এতে সংকট আরও বেড়ে যায়। তারপরও পাশের একটি টিনশেড ঘরে ক্লাস নেওয়া হচ্ছে।’

প্রধান শিক্ষক আরও বলেন, ‘দীর্ঘদিন এভাবে ফেলে রাখার পর কেন নতুন ভবন হচ্ছে না জানতে গেলে আসল রহস্য বেরিয়ে আসে। ওই স্কুল ভবনের জায়গায় কোনও নতুন ভবন নির্মাণের দরপত্র আহ্বান করা হয়নি। উপজেলা প্রকৌশল বিভাগের ভুলে স্কুল ভবন ভাঙা হয়েছে। নতুন ভবনের কাজ শুরু করতে গিয়ে ধরা পড়ে বিষয়টি। এরপর তারা নিশ্চুপ ভূমিকা পালন করে আসছে, কোনও সমাধান দিচ্ছে না। তাদের ভুলের খেসারত দিতে হচ্ছে শিক্ষার্থীসহ সংশ্লিষ্টদের। আমাদের কথা হলো, যে ভবন ছিল তা ফিরিয়ে দেওয়া হোক। না হলে শিক্ষার্থীদের নিয়ে আন্দোলন করবো।’

গৈলার ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম টিটু বলেন, ‘ওই বিদ্যালয়ের ক্লাসরুম সংকটের কারণে একটি নতুন ভবন নির্মাণের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়। কিন্তু গত একবছরেও নির্মাণকাজ শুরু হয়নি। পরে জানতে পারি, নতুন ভবন নির্মাণের জন্য যে দরপত্র আহ্বান করা হয়েছিল তা ওই বিদ্যালয়ের জন্য নয়। উপজেলার অন্য আরেকটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জন্য। এ বিষয়ে উপজেলা আইনশৃঙ্খলা সভায় একাধিকবার বলা হলেও কোনও ব্যবস্থা নেয়নি এলজিইডি বিভাগ।’

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শেখর রঞ্জন ভক্ত বলেন, আমি ওই বিদ্যালয়ের নতুন ভবন নির্মাণের জন্য এলজিইডি’র একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলেছি। তারা বলেছেন, দ্রুত এই সমস্যার সমাধান করা হবে। সেক্ষেত্রে নতুন ভবন নির্মাণ করে দিতে হবে এলজিইডিকে।

এলজিইডি’র আগৈলঝাড়া উপজেলা প্রকৌশলী শিপলু কর্মকার বলেন, ‘বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। আশা করছি, দ্রুত সময়ের মধ্যে সমস্যার সমাধান হবে।’