ভোলায় আরও ৯৭টি সাইক্লোন শেল্টার: নির্মাণ কাজের অগ্রগতি ৫৫ ভাগ

ভোলার সাত উপজেলায় বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে দ্বিতীয় পর্যায়ে ৫২৮ কোটি টাকা ব্যয়ে ৯৭টি সাইক্লোন শেল্টার নির্মাণ কাজ এগিয়ে চলছে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর (এলজিইডি) মাল্টিপারপাস ডিজাস্টার শেল্টার প্রজেক্টের (এমডিএসপি) আওতায় বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্রগুলোর ৫৫ ভাগ কাজ ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। ২০২০ সালের মার্চ মাসে এ প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। ১০ হাজার ৫০০ স্কয়ার ফিট জমির উপর তিনতলা বিশিষ্ট প্রতিটি স্কুল কাম সাইক্লোন শেল্টার নির্মাণ আগামী বছরের জুনের মধ্যে শেষ হবে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

ভোলা এলজিইডি’র নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ ইব্রাহীম খলীল জানান, দ্বীপ জেলা হওয়ায় এখানে সাইক্লোন শেল্টার নির্মাণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এর মধ্যে বেশ কিছু শেল্টার রয়েছে দুর্গম চরাঞ্চলে। নতুন নির্মিত এসব আশ্রয় কেন্দ্রে অত্যাধুনিক সকল সুযোগ-সুবিধাই থাকছে। নিচ তলাটি ফাঁকা থাকার ফলে দুর্যোগকালে সহজেই পানি সরে যাবে এবং অন্য সময়ে বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা যাবে সেখানে।

১০ তলা ভিত্তিপ্রস্তরের এসব আশ্রয়কেন্দ্র পরবর্তী সময়ে আরও সম্প্রসারণ করা যাবে উল্লেখ করে তিনি জানান, দুর্যোগকালে প্রতিটি কেন্দ্রে ২ হাজার মানুষ অবস্থান নিতে পারবে। ব্যবস্থা রাখা হয়েছে পর্যাপ্ত গবাদি পশু রাখারও। ফলে প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় প্রায় ২ লাখ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে এসব আশ্রয় কেন্দ্রে।

কাজের শতভাগ গুণগত মান বজায় রাখার জন্য নিয়মিত মনিটরিং করা হচ্ছে বলে জানান ইব্রাহীম খলীল। তার কথায়, এগুলো চালু হলে দুর্যোগ মোকাবেলায় এ অঞ্চলের মানুষের সক্ষমতা বাড়বে। জনমনে নিরাপত্তাহীনতা দূর হয়ে স্বস্তি ফিরে আসবে।

এছাড়া একই প্রকল্পের আওতায় গত অর্থ বছরে ২৩৮ কোটি টাকায় ৪২টি স্কুল কাম সাইক্লোন শেল্টার নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে।

ভোলা জেলায় বর্তমানে নির্মাণাধীন মোট ৯৭টি স্কুল কাম সাইক্লোন শেল্টারের মধ্যে ভোলা সদরে হচ্ছে ১৭টি, দৌলতখানে ৯টি, বোরহানউদ্দিনে ১০টি, লালমোহনে ২২টি, তজুমদ্দিনে ১০টি, চরফ্যাসনে ২৩টি ও মনপুরা উপজেলায় ছয়টি রয়েছে। ভোলার প্রকল্প ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী আসাদুজ্জামান জানান, জেলার দুর্গম চর জহিরউদ্দিন, কলাতলীর চর, চর কুকরিমুকরি ও মুজিবনগরে প্রতিকূল পরিবেশ পরিস্থিতির মধ্যে ও দ্রুত গতিতে কাজ বাস্তবায়ন হচ্ছে।

প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী জাবেদ করিম জানান, দেশের দুর্যোগপ্রবণ উপকূলীয় অঞ্চলের ৯টি জেলা ভোলা, বরিশাল, পিরোজপুর, পটুয়াখালী, লক্ষীপুর, ফেনী, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলায় বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে ৫ হাজার স্কুল কাম সাইক্লোন শেল্টার নির্মাণ করা হচ্ছে। শেল্টারের সঙ্গে থাকছে সংযোগ সড়ক। পুরো প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে উপকূলীয় অঞ্চলের কোটি মানুষ যেকোনও প্রাকৃতিক দুর্যোগে নিরাপদ আশ্রয় পাবে।