কারাগারে জন্মের ১১ মাস পর মায়ের সঙ্গে মুক্ত

এক বছর পর বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন টুম্পা বাড়ৈ। একইসঙ্গে জেলখানার পরিবেশ থেকে মুক্ত হলো তার যমজ দুই সন্তান সাগর ও সাগরিকা।

বুধবার (২৯ জুন) মুক্ত হওয়ার পর অপরাধ সংশোধন এবং পুনর্বাসন সমিতির পক্ষ থেকে এই দুই শিশুর জন্য আর্থিক সহায়তা এবং তাদের মাকে একটি সেলাই মেশিন দেন জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দীন হায়দার। টুম্পা বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার বাহাদুরপুর গ্রামের হৃদয় পান্ডের স্ত্রী। হৃদয় বর্তমানে বেকার।

জেলা প্রবেশন কর্মকর্তা সাজ্জাদ পারভেজ জানান, পাঁচ লাখ টাকার চেক জালিয়াতির মামলায় ২০২১ সালের ৩০ জুন কারাগারে যান টুম্পা। পরে প্রমাণিত হয় ওই চেকটিতে বাদী ষড়যন্ত্র করে টুম্পার কাছ থেকে স্বাক্ষরটি আদায় করে। বিষয়টি আদালত শতভাগ নিশ্চিত হয়ে তাকে কারাগার থেকে মুক্তি দেন।

তিনি জানান, কারাগারে থাকা অবস্থায় টুম্পা যমজ শিশুর জন্ম দেন। ছেলের নাম রাখা হয় সাগর এবং মেয়ের নাম সাগরিকা। বর্তমানে তাদের বয়স ১১ মাস। মায়ের সঙ্গে তারাও কারাগারে ছিল। ওই সময় টুম্পা সেলাই মেশিনের কাজ শেখেন। তিনি এখন ভালোভাবে মেয়েদের পোশাক বানাতে পারেন।

তার মুক্তির খবর পেয়ে জেলা প্রশাসকের নির্দেশে তার যমজ শিশুদের জন্য আর্থিক সহায়তা এবং তার জন্য সেলাই মেশিনের ব্যবস্থা করতে বলেন। মুক্ত হওয়ার দুই ঘণ্টার মধ্যে টুম্পাকে এসব সহায়তা দেওয়া হয়। এ সময় তার স্বামী হৃদয় পান্ডেও উপস্থিত ছিলেন। বাড়ি গিয়ে সেলাই মেশিনে কাপড় সেলাই করবেন স্ত্রী আর স্বামী তাকে সহায়তা করবেন।

জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দীন হায়দার বলেন, অপরাধ সংশোধন এবং পুনর্বাসন সমিতির মাধ্যমে বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগারে আসামি ও কয়েদিদের বিভিন্ন প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। যাতে করে তারা মুক্ত হয়ে আত্মনির্ভরশীল হতে পারে। এ জন্য তাদের আর্থিক সহায়তাও করা হয়। এরপর তাদেরকে ফলোআপে রাখা হয়। এভাবে বহু আসামি ও কয়েদি বর্তমানে অপরাধ থেকে সরে ভালোভাবে জীবনযাপন করছেন। এরই ধারাবাহিকতায় টুম্পাকেও আর্থিক সহায়তাসহ একটি সেলাই মেশিন দেয়া হলো। যাতে করে সে আয় করে সংসার চালাতে পারে।