নারী দোকানিকে সহায়তা দিতে বললেন প্রধানমন্ত্রী

পিরোজপুরের কঁচা নদীর ওপর নির্মিত বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব অষ্টম বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতু ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রবিবার (৪ সেপ্টেম্বর) উদ্বোধন হওয়া ৮৮৯ কোটি টাকার এই সেতুকে কেন্দ্র করে স্থানীয়দের আর্থসামজিক অবস্থা বদলে যাবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সেতু নিয়ে নিজের অনুভূতি জানাতে তেমনটাই ইঙ্গিত দিলেন স্থানীয় চা দোকানি শিপ্রাকুন্ড।   

কাউখালীর ক্ষুদ্র নারী ব্যবসায়ী শিপ্রাকুন্ড তার অনুভূতি প্রকাশ করে বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বেকুটিয়া ফেরিঘাটে  আমার একটি চায়ের দোকান ছিল। সেতু হওয়ার পরে চায়ের দোকানটি সেতুর কাছে নিয়ে আসি। আমার সংসারের কাজ শেষ করে দোকানে চা-বিস্কুট বিক্রি করি, এখানে অনেক দূর দূরান্ত থেকে মানুষ ঘুরতে আসে। আমার স্বামী একজন দিনমজুর। আমরা দুজনে মিলে চায়ের দোকানটি শুরু করেছি।’

এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নারী ব্যবসায়ীর সাফল্য কামনা করেন। তিনি বলেন, আমি আশা করছি সেতু হওয়ার কারণে লোকজনের চলাচল বাড়বে। আপনার চায়ের দোকানটিও ভালো চলবে।’

পরে প্রধানমন্ত্রী পিরোজপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ার হোসেন মঞ্জুকে উদ্দেশ্য করে বলেন, শিপ্রাকুন্ডর চায়ের দোকানটি যাতে আরও ভালো হয় সে বিষয়ে সহায়তা করবেন। 

সেতু উদ্বোধন উপলক্ষে পিরোজপুর সদর উপজেলার  কুমিরমারা প্রান্তে ও কাউখালী উপজেলার বেকুটিয়া প্রান্তে দুটি সুবিশাল প্যান্ডেল তৈরি করা হয়। কাউখালীর বেকুটিয়া প্রান্তে আয়োজিত অনুষ্ঠানে কাউখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছা. খালেদা খাতুন রেখা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানিয়ে বক্তব্য রাখেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আজ আমি খুবই আনন্দিত। জেলা সদরে যাওয়া আসা খুবই কষ্টকর ছিল। সেতু উদ্বোধন হওয়ায় মানুষের কষ্টটা দূর হল, এতে ব্যবসা-বাণিজ্য প্রসারিত হবে। শিক্ষার্থীরাও উচ্চ শিক্ষার সুযোগ পাবে।

প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালের ১ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সেতুটির নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেন। ৯৯৮ মিটার দৈর্ঘ্যের ও ১৩ দশমিক ৪০ মিটার প্রস্থের সেতুতে ১০টি পিয়ার ও ৯টি স্প্যান রয়েছে। ৮৮৯ কোটি টাকা ব্যয়ে চীনের চায়না রেলওয়ে ১৭ ব্যুরো গ্রুপ লিমিটেড নামের একটি প্রতিষ্ঠান সেতুটি নির্মাণ করেছে। এর মধ্যে ৬৫৪ কোটি ৭৯ লাখ টাকা চীন সরকার এবং বাকি অর্থ বাংলাদেশ সরকার দিয়েছে। গেল ৭ আগস্ট ঢাকায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে বৈঠকে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই সেতুর হস্তান্তর সনদ চুক্তিতে সই করেন।