রাতে প্রসূতির সিজার অপারেশন, সকালে মৃত্যু

ভোলায় ভুল চিকিৎসায় আছিয়া বিবি (৩৫) নামে এক প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। শহরের ডায়াবেটিস হাসপাতালে চিকিৎসকের ভুল অস্ত্রোপচারের কারণে ওই প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ স্বজনদের।

ওই নারী জেলার সদর উপজেলা শিবপুর ইউনিয়নের শিবপুর গ্রামের আব্দুল রহমানের স্ত্রী। তার স্বামী পেশায় জেলে। চিকিৎসকের অবহেলায় রোগীর মৃত্যুর ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন রোগীর স্বজনরা। তবে, চিকিৎসক ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে ওই প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে।

পরিবার জানায়, রবিবার (১১ ডিসেম্বর) রাত ৯টায় প্রসূতি আছিয়াকে শহরের ডায়াবেটিক হাসপাতালের গাইনি চিকিৎসক আফরোজা বেগমকে দেখাতে গেলে তিনি অস্ত্রোপচারের পরামর্শ দেন। এ সময় তাকে বিভিন্ন ক্লিনিকে পরীক্ষা করাতে বলেন। অস্ত্রোপচারের পর একটি ছেলে সন্তানের জন্ম হয়। অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হলেও রাত থেকেই রোগী অসুস্থ হয়ে পড়েন। তবে রোগীকে কোনও চিকিৎসা দেননি চিকিৎসক বা হাসপাতালের কোনও স্টাফ। সোমবার সকালে মুমূর্ষু অবস্থায় ওই রোগীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শেরে-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠালে পথে তার মৃত্যু হয়।

স্বামী আব্দুর রহমান দাবি করেন, সিজারের পর আমাদের কাউকে ভেতরে ঢুকতে দেয়নি। তারা রোগীর চিকিৎসায় অবহেলা করেছে। হাসপাতালেই রোগীর মৃত্যু হলেও তারা তা আমাদেরকে বুঝতে না দিয়ে বরিশালে রেফার্ড করেছে।

রোগীর স্বজন জিন্নাহ বলেন, রোগীকে সরকারি হাসপাতালে সিজার করানোর অনুরোধ করলেও তারা ভোলা ডায়াবেটিক হাসপাতালে সিরাজ করায়। তারপর থেকে রোগীর খিচুনি শুরু হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাকে আইসিইউ লাগবে বলে বরিশালে রেফার্ড করে।

ডায়াবেটিক হাসপাতালের ওটি ইনচার্জ ইসমাইল হোসেনের দাবি, সিজারের পর সোমবার সকালে রোগী হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরে তাকে জরুরি অক্সিজেন এবং আইসিইউতে নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। কারণ ভোলাতে আইসিইউর সুবিধা নেই। আমাদের এখানে থাকা অবস্থায় রোগী সুস্থ ছিল। সিজারের পর কোনও সমস্যা ছিল না।

অভিযোগ অস্বীকার করে গাইনি চিকিৎসক আফরোজা বেগম দাবি করেন, অপারেশন সফলভাবেই সম্পন্ন হয়েছে। ভুল চিকিৎসা বা অবহেলায় তার মৃত্যু হয়নি। আমরা রোগীকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দিয়েছি। রোগী কিছুটা বয়স্ক ছিল। এটা তার পঞ্চম সন্তান। বয়স্ক মানুষের হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি থাকে। হয়তো সে কারণেই তার মৃত্যু হতে পারে।