রোগীসহ ৬ জন নিহত: অ্যাম্বুলেন্সের চালক ‘ঘুমিয়ে পড়ায়’ দুর্ঘটনা

শরীয়তপুরের জাজিজার নাওডোবা এলাকায় মঙ্গলবার (১৭ জানুয়ারি) ভোরে ট্রাকের পেছনে ধাক্কা দিয়ে একটি অ্যাম্বুলেন্সে থাকা ছয় জন নিহত হয়েছেন। প্রাথমিকভাবে পুলিশ ধারণা করছে, অ্যাম্বুলেন্সের চালক ঘুমিয়ে পড়ার কারণে আইল্যান্ডে ধাক্কা লেগে দ্রুতগতির গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ট্রাকের পেছনে ধাক্কা দেয়। এতেই এত বড় এই দুর্ঘটনা ঘটে।

এই ঘটনায় নিহতরা হলেন- দৈনিক নবচেতনা’র ব্যুরো প্রধান ও নিউজ পোর্টাল বিডি বুলেটিনের প্রতিনিধি মাসুদ রানা (৪০), স্বাস্থ্যকর্মী পটুয়াখালীর দশমিনা আদমপুর গ্রামের রাজ্জাক মল্লিকের ছেলে ফজলে রাব্বি (২৮), রোগী আমেরিকা প্রবাসী লতিফ মল্লিকের স্ত্রী জাহানারা বেগম (৫৫) ও তার মেয়ে লুৎফুন্নাহার লিমা (৩০), ঢাকার খিলগাঁওয়ের তালতলা এলাকায় কাওসার হাওলাদারের ছেলে রবিউল ইসলাম (২৬) ও গাড়িচালক মাদারীপুর জেলার মোস্তফাপুর গ্রামের হিরু মৃধার ছেলে জিলানি (২৮)।

নিউজ পোর্টাল বিডি বুলেটিনের পরিচালনা পর্ষদের সদস্য কাজী আফরোজ জানান, বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে রোগী জাহানারা বেগমকে অ্যাম্বুলেন্সে করে ঢাকায় যাচ্ছিলেন মাসুদ রানা। জাহানারা তার পরিচিত। বিভিন্ন মাধ্যমে জানতে পেরেছেন, রাত ৩টার দিকে জাজিরায় পদ্মা সেতু টোলপ্লাজার কাছে গতিনিরোধক পার হতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন অ্যাম্বুলেন্সের চালক। এ সময় সেখানে থামিয়ে রাখা গ্যাস সিলিন্ডার বোঝাই ট্রাকের পেছনে সজোরে আছড়ে পড়ে অ্যাম্বুলেন্সটি। এতে গাড়িটির সামনের অংশ দুমড়েমুচড়ে ঘটনাস্থলেই ওই ছয় জনের মৃত্যু হয়।’

তিনি আরও জানান, সোমবার সকালে অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে মাসুদ রানার স্ত্রী লাশ আনতে শিবপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উদ্দেশে রওনা হয়েছেন। এ ছাড়া আর কিছু জানাতে পারেননি তিনি।

ঘটনাস্থলে থাকা পদ্মা সেতু দক্ষিণ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সুরুজ মিয়া বলেন, ‘ধারণা করা হচ্ছে, অ্যাম্বুলেন্সের চালক ঘুমিয়ে পড়েছিল। এ কারণে গাড়ির নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে থামিয়ে রাখা ট্রাকের পেছনে আছড়ে পড়ে ছয় জন নিহত হয়। ঘটনার পরপরই ট্রাক রেখে পালিয়ে গেছে চালক ও হেলপার। ট্রাকটি জব্দ করা হয়েছে। চালককে আটকের চেষ্টা চলছে।’

জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক মাসুদুল হাসান বলেন, ‘দুর্ঘটনার পরপরই পুলিশ ওই ছয় জনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসেন। তাদের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখা গেছে, তারা আগেই মারা গেছে। তাদের লাশ জেলা হাসপাতালে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। সেখানে ময়নাতদন্ত শেষে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।’