প্রথম স্ত্রীর স্বজনদের ভোটে নির্বাচনে জিতে দ্বিতীয় স্ত্রীকে তালাক দিলেন ইউপি সদস্য

প্রথম স্ত্রীর আত্মীয়-স্বজনদের ভোটে নির্বাচনে জিতে দ্বিতীয় স্ত্রীকে তালাক দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এক ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে। ওই ইউপি সদস্যের নাম নাসির উদ্দিন মৃধা। তিনি পটুয়াখালীর দুমকি উপজেলায় সোমবার (১৭ জুলাই) অনুষ্ঠিত শ্রীরামপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য নির্বাচিত হন।

তার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, দ্বিতীয় স্ত্রীকে তালাক দেওয়ার শর্তে তার প্রথম স্ত্রীর আত্মীয়-স্বজনরা তাকে ভোট  দিয়েছেন। এতে নির্বাচিত হয়ে সোমবার (১৮ জুলাই) রাতে দ্বিতীয় স্ত্রীকে তালাক দেন। ভুক্তভোগীর হাত-পা বেঁধে শারীরিক নির্যাতন করা হয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় দুমকি থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ওই নারী।

অভিযুক্ত ইউপি সদস্য নাসির উদ্দিন মৃধা দুমকি উপজেলার শ্রীরামপুর ইউনিয়নের দুমকি গ্রামের সফিজ উদ্দিন মৃধার ছেলে। তিনি দুমকি ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসার সহকারী শিক্ষক এবং শ্রীরামপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি। তার প্রথম স্ত্রী নাসিমা বেগম একই প্রতিষ্ঠানের সহকারী শিক্ষিকা।

ভুক্তভোগীর বাবার বাড়ি বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জ উপজেলায়। তিনি দুমকি উপজেলার আংগারিয়া ইউনিয়নে পরিবার পরিকল্পনা বিভাগে চাকরি করেন।

তার দাবি, মেম্বার নির্বাচিত হওয়ার পরে বাড়িতে এসে আমাকে হাত-পা বেঁধে মারধর করেছে। একপর্যায়ে তালাক দিয়ে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিয়েছে আমাকে। এ ছাড়াও আমার ২২ মাস বয়সী কন্যা সন্তানকে আটকে রেখেছে। এই বিষয়ে দুমকি থানায় গিয়ে অভিযোগ দিয়েছি। কেন মারধর ও তালাক দিয়েছেন এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ১৬ বছর আগে উপজেলার দুমকি ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডের বাদশা প্যাদার সঙ্গে তার বিয়ে হয়। এরপর বাদশাকে তালাক দিয়ে আড়াই বছর আগে নাসির উদ্দিনকে বিয়ে করেন। তখন তার স্বামীর প্রথম স্ত্রী মেনে নিলেও ইউপি সদস্য হিসেবে নির্বাচনে দাঁড়ালে বাদে বিপত্তি। প্রথম স্ত্রীর আত্মীয়-স্বজনরা শর্ত দেন, দ্বিতীয় স্ত্রীকে তালাক দিতে হবে, নাহলে তারা ভোট দেবেন না। এ সময় তাদেরকে প্রতিশ্রুতি দিলে তারা নির্বাচনে তাকে ভোট দেন। এতে নির্বাচিত হওয়ার পরদিনই দ্বিতীয় স্ত্রীকে তালাক দেন।

অভিযুক্ত ইউপি সদস্য দাবি করেন, তাকে জোরপূর্বক তালাক দেওয়া হয়নি। তার সম্মতিক্রমে এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সামনে তালাক হয়েছে।

দুমকি থানার ওসি তারেক মো. হান্নান বলেন, আমি আজকে নতুন যোগদান করেছি। এ বিষয়ে থানায় অভিযোগ দিলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল ইমরান বলেন, তাদের কাছে থেকে শুনে বিষয়টি মীমাংসার চেষ্টা করবো। আর না হলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।