বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গুলিতে নিহত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হৃদয় চন্দ্র তরুয়ার (২২) বড় বোন মিতু রানীকে চাকরি দিয়েছে পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (পবিপ্রবি) কর্তৃপক্ষ।
বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য কাজী রফিকুল ইসলাম হৃদয় তরুয়ার বোন মিতু রানীর হাতে চাকরির নিয়োগপত্র তুলে দেন। এ সময় হৃদয়ের বাবা রতন চন্দ্র তরুয়া, মা অর্চনা রানী ও ভগ্নিপতি দিপক মিস্ত্রি উপস্থিত ছিলেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ ও প্রকাশনা বিভাগের শাখাপ্রধান মুহাম্মদ ইমদাদুল হক।
গত ২৯ সেপ্টেম্বর পবিপ্রবির উপাচার্য হৃদয় চন্দ্রের পটুয়াখালী শহরের মুনসেফ পাড়া বাসায় গিয়ে পরিবারের খোঁজখবর নেন এবং মিতু তরুয়াকে চাকরি দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিলেন। পরবর্তীতে চাকরি পেয়ে সরকার ও বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন শহীদের পরিবারের সদস্যরা।
মিতু তরুয়া বলেন, চাকরিটা মূলত আমার না, আমার ভাইয়ের। চেষ্টা করবো ভাইয়ের দায়িত্বগুলো পালন করার, মা-বাবা ও আমার পরিবারের খেয়াল রাখার। আমি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানাই।
হৃদয় চন্দ্রের বাবা রতন চন্দ্র তরুয়া বলেন, ছেলেকে হারিয়ে আমার পরিবারের হাল ধরার মতো এখন আমার মেয়েই শুধু আছে। তাকে চাকরি দেওয়ায় সত্যিই অনেক উপকৃত হয়েছি। এখন আমার পরিবার এখন ডালভাত খেয়ে বাঁচতে পারবে।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, গত ১৮ জুলাই সন্ধ্যায় টিউশনি করে ফেরার পথে চট্টগ্রামের চাটগাঁ আবাসিক এলাকায় ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলছিল। এ সময় সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে তিনি গুলিবিদ্ধ হন। তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৩ জুলাই মারা যান।
হৃদয়ের বাবা রতন চন্দ্র তরুয়া একজন কাঠমিস্ত্রি। তাদের গ্রামের বাড়ি পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলার ঘটকের আন্দুয়া গ্রামে। অনেক বছর ধরে জেলা শহরে ভাড়া বাসায় বসবাস করছেন তারা। হৃদয় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ ও প্রকাশনা বিভাগের শাখাপ্রধান মুহাম্মদ ইমদাদুল হক বলেন, হৃদয় চন্দ্র তরুয়ার বোন মিতু রানীকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যাব অ্যাটেনডেন্ট পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আজ বেলা ১১টায় উপাচার্য কক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য কাজী রফিকুল ইসলাম মিতুর হাতে নিয়োগপত্র তুলে দেন। এ সময় হৃদয়ের বাবা রতন চন্দ্র তরুয়া ও মা অর্চনা রানী উপস্থিত ছিলেন।